বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫

ভালোবেসে অন্ধ হয়েও বুঝিনি
প্রেম আর ছলনার ব্যবধান
কাঁটার আঘাত সয়ে জেনেছি
গোলাপের সত্যতা।
কষ্টমাখা সময়ের যবনিকাপাত হোক
সব অভিমান মুছে যাক নতুনের শীতল জলে
খুলে যাক জীবনে বন্ধ দরজা-জানালা
নতুন সূর্যের আহ্বানে পুনরায় জেগে উঠুক সব।
গহীণ সাগরের অন্ধ অতলে
খুঁজে চলেছি স্বপ্নের বাতিঘর,
না পাওয়ার আগুনে পুড়ে ছারখার সব,
তবু এগিয়ে যাই সম্মুখপানে ।
জীবনের অন্ধ গুহায় বিষধর সব সাপেরা
ফণা তুলে আছে চারদিকে।
ছোবলে ছোবলে রক্তাক্ত হয়ে জেনেছি
জীবনের নিষ্টুর সত্যকে,
ভুলে ভরা জীবনর পুরনো সুর্য ডুবে গিয়ে
পুনরায় উঁকি দিক নতুন সূর্য
ঢেউ জেগে উঠুক শান্ত থেমে যাওয়া নদীতে
চৈত্রের তীব্র তাপে পোড়া ক্ষয়-ক্ষতি সেরে যাক,
জোছনা স্নাত রাত্রি মুছে দিক
কষ্টের নীল চিহ্ন গভীর মমতায়।.................
ফালগুনী, বল না-
কোন পাহাড়ের বুক চিরে
তুমি এলে?
কোন ভাগ্যবান তৃষিত পথিক
তোমার তনুতলে বসে
মেটাবে তৃষ্ণা
স্বচ্ছ সুশীতল জলে?
ফালগুনী, বল না,
কোন পাহাড়ের বুক চিরে
তুমি এলে।
ফালগুনী, চির যৌবনা,
কোন মহাসাগরের সঙ্গে
মিলন স্বপ্নে
তুমি বয়ে যাও
পর্বতের পাদদেশে
বনান্ত ঘেঁষে ঘেঁষে
কুলু কুলু রবে,
নৃত্যের তালে তালে?
ফিরিয়ে দিও না সমুদ্রের মত নির্মম প্রাণহীন করে
হাসলেই যদি যেন ভালবাসার রঙে ছোপানো হয়
হৃদয়ের দ্বার খোলা পাবে যদি ছন্দে রাখো জীবনটাকে
ধরলেই যখন হাতটা যেন নির্ভরতার হয়
ভোরের স্বপ্নের সত্যতা , দিবা স্বপ্নের ভ্রম নয়
চোখ মেলে দেখলেই যদি যেন মরীচিকা না হয়।
তুমি যা বলেছিলে, তাই তো করেছিলাম
হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা শীতের রাতে উদোম হয় কুয়াশা কুড়িয়েছিলাম,
তোমার গায়ে মাখব বলে,
ভোরের সূর্য থেকে তাপ এনে তোমাকে দিয়েছিলাম,
তোমাকে উষ্ণ করব বলে,
সৈকতের বিস্তীর্ণ বালি থেকে শামুক কুড়িয়ে মালা গেথেছিলাম
তোমাকে পড়াব বলে,
তোমাকে ঢাকব বলে......
একদিন ভালোবাসা তোমার দরজাতে কড়া নেড়ে যাবে
তুমি হতবিহবল হয়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে
বাইরে গিয়ে ডানে বামে সামনে উপরে নীচে তাকিয়ে দেখবে
কেউ নেই।
শুকনো পাতার মর্মর শব্দকে মনে হবে হারানো ভালোবাসার পদধ্বনি,
বাতাসের শো শো শব্দে হয়ত শুনবে, ভুলে যাওয়া প্রেমের সুর
বৃষ্টির ছল ছল শব্দে তোমার আমার প্রথম গান মনে হবে,
মেঘের উল্লাস শুনে কে যেন ডাকছে তোমায়,
তুমি ছটফট করবে, তুমি অশান্ত হবে,
তুমি দিক হারাবে, তুমি কুল হারাবে,
অশান্ত মন নিয়ে দরজার ওপাশে যেও না,
বাইরে কেউ নেই।
নীল সমুদ্র থেকে ঢেউ তুলতে গিয়েছিলাম,
ঢেউ এর সাথে যুদ্ধ করতে করতে এবার আর ফিরতে পারিনি
সবাই আমাকে তুলে এনেছিল।
ও টুকু পারি নি বলে
ক্ষমা করে দিও আজীবন।
আর নীল সাগরের কাছে যেও না,
ওখানে আমি নেই, ওখানে আমি আর আসব না।
চারিদিকে আলোর খেলায়, অন্ধকারের অপেক্ষায়
মধ্যবর্তী বিরতিতে আমার স্মৃতি যদি ঢুকে যায়,
কিংবা
স্বপ্নের ভিতর ভালোবাসার আত্মহত্যা দেখে কেঁপে উঠবে,
বিছানার ডান পাশে হাতরিয়ে অহেতুক আমাকে খুঁজো না,
কিংবা মনের অজান্তে দরজার বাইরে যেওনা,
ওখানে কেউ নেই।

মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫

হাজার হাজার প্রেমের কাব্যে পেলাম না
নজরুলের নারগিছ।
তোমাকে পেয়ে
আমার এই অশ্রুহীন চোখ স্তব্ধ হয়েছে,
আমি হয়েছি শব্দহীন প্রেমিক,
আমি তাই হাত বাড়িয়ে আছি তোমার দিকে।
একজন বনলতা সেন খুঁজতে কখনো নাটোর যেতে হয় নি,
শান্তি নিকেতনে রৌদ্র উজ্জল দিনে, গাছের ছায়ায়
ধবধবে সাদা শাড়ীতে, কালো চুলের খোঁপাতে বেলি গুজে
অনাগত বাঙ্গালীর বেশে যে মেয়েটি একাকী বসে
শেষের কবিতা পড়ছিল,
কখনো মনে হয়নি সে হৈমন্তী।
কিছুটা অশ্রু,
কিছুটা হাসি,
কিছুটা চুলের গন্ধ,
কিছুটা ঠোঁটের রঙের খোঁজে
জেগে জেগে আকাশের বুকে কান পেতে তোমার শব্দ শুনি।
আমি নিঃশ্বাস ফেলতে পারি না,
আমি ঘুমাতে পারি না,
তোমার প্রেমে ডুবে গিয়ে শেষ নিঃশ্বাসে বলি
আমাকে দু’ফোঁটা অশ্রু দাও।
যদি পার,
কিছুটা হাসি, কিছুটা চুলের গন্ধ, কিছুটা ঠোঁটের রং
আমার জন্য রেখে দিয়ো।
আমি বার বার ওগুলো ছুয়ে ছুয়ে দেখব।
আজ আমার এই অন্ধ প্রেমে
তোমার কিছুই চাওয়ার নেই, জানি
আমার জন্য কখনো দু’ফোঁটা চোখের জল হবে?
আমি সিক্ত হব।
আমার জন্য কখনো দু’ফোঁটা চোখের জল হবে?
আমি সজিব হব।
দূরে থেকে কাছে যায়,
কাছে থেকে আরও কাছে আসি
তোমার নিঃশ্বাসের বাতাস শুনে শুনে
যৌবনের শিকড়ে ঢেলে দিই আরও কিছু রং
কামনার রং, বাসনার রং,
তুমি স্তব্ধ, তুমি অবাক,
ইচ্ছাতে তুমি নিরুপায়,
যেদিন তুমি লাল শাড়ি, লাল টিপ পড়ে এসেছিলে,
ইচ্ছে হচ্ছিলো সূর্যোদয়ের লাল আভাটুকু বদলে দিই।
বহুক্ষণ মুখোমুখি দুজনে,
কয়েকবার তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে
মনে হচ্ছিলো কাজল কালো চোখের এই কালো টুকু
অন্য কোথাও না থাকলে ভালো হত।
তোমার দৃষ্টির রং, তোমার কৃষ্টির রং,
তোমার বিশ্বাসের রং, তোমার নিঃশ্বাসের রং,
ব্লাউজের নীচে কিছু মসৃণতার রং,
খুব কাছে থেকে মুক্তাকাশে রং ধনু দেখার মত।
খুব আস্তে, ফিসফিস করে নিজেকে বলি
সব রং না দেখে তোমাকে আজ ছাড়ছি না।
সব রং না মেখে তোমাকে আজ যেতে দিচ্ছি না।
আনন্দের ক্লান্তির রাঙ্গানো দু’চোখ
ফের চোখ তুলে কিছু ভালোবাসা বিনিময়,
রঙের ভিখারী হয়ে কাটিয়ে দিলাম সারাটা দিন।
দিন জানে, বেলা শেষ
সময় জানে, যেতে হবে
আকাশ জানে, মেঘ হবে
মেঘ জানে, বৃষ্টি নামবে,
বৃষ্টি জানে, তুমি আমি ভিজব
কেউ যেন আজ আমাদের তাড়া না দেয়,
কতক্ষণ ধরে বসে তুমি আমি জীবনের জন্য।।............
তবু প্রতিনিয়ত চলে দৈন্দদিন আচার
সব লেনা-দেনা,চাওয়া-পাওয়া,
বুকের ভেতর এক আজন্ম গোপন স্বত্বা
কেবলই আর্তনাদ করে।
কান্নার জলে ভাসিয়ে দিয়ে যাবতীয় সুখ
নিজের সাথে নিজেই যুজি প্রতিটি সন্ধ্যায়
কষ্টের মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে দু’চোখ বেয়ে।
বুকের ভেতর গোপন মন্থন খেলা করে
কষ্টের পায়রা ডানা ঝাপটায় বৃষ্টি চায়,অনেক বৃষ্টি।
আকণ্ঠ তৃষ্ণা নিয়ে জেগে থাকি
সুখের সাগরে জীবনের স্নান হয়না।
ফিরে ফিরে খুঁজি সেই দিনগুলি
যা হারিয়েছি জীবনের প্রথম প্রহরে।
সময়ের নিষ্ঠুর স্রোতে ভাসতে ভাসতে
আজ আকন্ঠ ডুবে আছি ভয়ঙ্কর স্থবিরতায়
এ থেকে যেন মুক্তি নেই।
দু’চোখের তীরে নুহের প্লাবণ
বুকের নিভৃত প্রকোষ্টে তীর ভাঙ্গা নদীর গর্জন,
কালবৈশেখির ঝড় নীরবে সব কিছু লন্ড-ভন্ড করে
সমাজের অলিখিত নিয়মের বেড়াজাল
পরগাছারমতো সমস্ত শরীরে বেড়ে উঠে,
ভেতরে নীরবে কাঁদি প্রকৃতিরমতো।।
তোমার মুখের মতো আর কোনো গাঢ় লাল আভা
কখনো দেখিনি....
আমাদের তড়িঘড়ি সংক্ষিপ্ত চুমোর মধ্যে কেবল দেখেছি
স্বপ্নের বাস্তবে ঘড়ির যুগল কাঁটা
মিলেমিশে স্থির হ’য়ে আছে;
খুব ঘন কুয়াশার মধ্যে
আমরা দুজন
সোনালি কাঁকড়ার ক্ষুদ্র দাঁড়ার ওপর
ঘণ্টা আর মিনিটের কাঁটার মতন এক হ’য়ে
নিবিড় দাঁড়িয়ে আছি—
আমাদের সংকীর্ণ সাঁকোর নিচে
সময় গড়ায়...
ভবিষ্যতে কোনো এক আলোকিত বিদেশি বন্দরে
পৃথিবীর দীর্ঘতম চুম্বনের প্রতীক্ষায়
খুব ঘন দেশি কুয়াশায়
সংক্ষিপ্ত সময়ব্যাপী আমাদের প্রগাঢ় চুম্বন...
পারদের মতো ভারী কিন্তু খুবই অস্থির এক
সময়ের জলে
চুম্বনে ও আলিঙ্গনে আমাদের পবিত্র শরীর ভেসে যায়...
ঘণ্টা আর মিনিটের কাঁটা যেমন যথার্থভাবে
একে অপরের টানে পরস্পর মিশে যায় একটি সময়ে
আমরা দুজন তেমনি সোনালি কাঁকড়ার তীক্ষ দাঁড়ার ওপর
ঠোঁটে ঠোঁট গুঁজে এক হ’য়ে আছি...
আমাদের উভয়ের ঠোঁটে
অত্যন্ত সুদূর এক চুম্বনের স্মৃতি:
দীর্ঘতম চুম্বনের প্রতি দৌড়ে যাই
আমরা দুজন;
বিঃদ্রঃ এই কবিতাটির সুত্র ও অনুপ্রেরনায়
আকণ্ঠ আপেক্ষার দহনে পুড়ছি
নিঃসঙ্গ একা জীবনে।
কোন ঝড় ছিলো না
তবু এই অবেলায় নীরবে ঝরে পড়া।
একদিন ছিলো অনেক কিছুই
আজ কিছুই নেই,
সূর্য কিংবা কমলা রঙা রোদ,
সবুজ পাতর বুকে
রোদ ঝলমল সতেজ সকাল।
আজ অনেক কিছুই মুছে গেছে
নতুনের ভীড়ে নির্বাসিত হয়েছে
পুরাতন সব স্মৃতির জোনাকী,
আমি আছি তেমনি ঝরা পাতার কান্না
বুকের ভেতর আগুন রঙের দুঃখ পুষে।
গাছের ডালে পাখির গান নেই,
আমি আজ এক হলুদ ঝরা পাতা
বুক জুড়ে তপ্ত বালু,
মলিন বিবর্ণ পালক দু’একটা মরা ভ্রমর
আর নিষিদ্ধ কীটের বাস।
ছোবলে ছোবলে রক্তাক্ত করে মরণের চিতা আবিরাম জ্বলে
দিবানিশি অন্তর জুড়ে জানি পাবো না তোমায় তবু
পোড়া দু’চোখ তোমাকেই খুঁজে ফিরে।
অপেক্ষার কালো রাত্রি চেটে পুটে খায় সকল কামনা
শুধু জেগে থাকে অনাহারী মন,বর্তমান জীবন।
দেখে নিও একদিন অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষন আসবে
যখন তোমার আমার আলাদা বলে কিছুই থাকবেনা,
লোকে আমায় উন্মাদ ভাবুক কি আসে যায় তাতে!
ভুল পথে হাঁটতে হাঁটতে আজ পথের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে,
ভুল ভরা জীবনের অভিমানী নদী কঠিন পাথরের বুক চিরে বয়।
শান্ত সমুদ্রে সদর্পে ঘুরে বেড়ায় ভয়ঙ্কর হাঙ্গর
নির্মল জলাশয় ভরে বিষধর সব সাপ।
আমি চলে যাচ্ছি তবে আবার ফিরে আসবো
ভাটিতে যাওয়া নদী যেমন জোয়ারে ফিরে আসে
আমি ঠিক তেমনই আসবো অপেক্ষায় থেকো।
অপেক্ষার ঝাঁঝাঁলো রোদ্দুরে দিনমান পুড়ে পুড়ে
নিজ়েকে নির্মল করেছি আমি জানি তুমিও
আমার ফিরে আসা হবে শুধু তোমার জন্য।
আমার উচ্চতায় হাত বাড়াতে ভয় একথা কখনো বলবেনা
ভালোবাসায় এসব কথা বড়ই বেমানান,
টুটে যাওয়া স্বপ্নের ভেতরে কেলিতে মত্ত
সেই মরালীকে স্পষ্ট মনে আছে
যার পালকে ঝরে জল
মুক্ত দানার মত,
প্রেমের আদ্র অনুভবে জেগে থাকি
যদি তুমি আস ফের
যুথবদ্ধ জোনাকির আলোয়
অন্য কোন রুপে ।
নিধুয়া বনের সেই কামিনী কাঞ্চন
ষোড়শী কিশোরী এক
শরীরে ধরে যে স্পষ্টই রমনীর আভাস
একদা এক পূর্ণেন্দু রাতে
আমার আরক্ত করতলে
রেখেছিল সে অস্থির চুম্বন
করোটীর গভীরে চাষাবাদ করেও
তাকে আর স্মরণ করতে পারি না ।
স্বপ্নদেবীর ঘুম তবু ভাঙে না
স্বর্গের টিকিট তামাদি হয়ে যায়
অশোক তরুরা সব মরে যায়
আমার করোটীর গভীরে নেমে আসে
গোধূলীর বিষাদে ভরা অন্ধকার,
পাহাড়ী বনের সেই নির্ঝরিনী
কুয়াশা ভেদ করে ধাবমান মেঠো পথ
সব মনে আছে,
মনে আছে পূর্ণেন্দু রাত
অশোক বনের মাতাল হাওয়া,
অশ্বারোহী সেই দেবদূত
যে স্বর্গের টিকিট বিক্রি করেছিল-
সব মনে আছে
মনে নেই শুধু সেই কামিনী কাঞ্চনকে ।
তাকে ফিরে পেতে
মহাকালের পথ ধরে ধাবমান বৃক্ষের মত
বহুরাত আমি প্রার্থনায় নতজানু থেকেছি
স্বপ্নদেবীর ঘুম ভাঙানিয়া
রাতের প্রতীক্ষায়,
তবু আমি সদ্য ফোটা কুসুমের মত
ধুপের গন্ধ গায়ে মেখে
গভীর হওয়া রাতের প্রতীক্ষায়
কলেজ ক্যান্টিন আজো আছে,আছে লাইব্রেরী
শুধু নেই তুমি,আমি তো তোমার আগেই বিতাড়িত
সেটা কী আবেগের বশে নাকি ভাগ্যদোষে
আজো তার এক্সরে রিপোর্ট পৌঁছায়নি আমার হাতে
মনে নেই, শেষ কবে দেখা হয়েছিল তোমার সাথে?
তোমাকে খুঁজতে আমি যাই নি কোনদিন ক্যাম্পাসে
কোথায় আছো ফালগুনী? বিক্ষুব্ধ এদেশে নাকি পরবাসে?
শেষবারে তুমি চেয়েছিলে আমার ঠিকানা,আমি তো চাই নি
এরপরে জুটেছে বহু শুভাকাঙ্খী,তোমার মত কাউকে পাই নি
মুখ ফুটে তোমায় কোনদিন বলিনি, তুমি আমার প্রিয়তমা
অশান্ত মনে ঢেউ খেলে যায়; ভালো থেকো, ফালগুনী।
শেষ কবে দেখা হয়েছিল মনে নেই
স্মৃতিগুলো নাড়া দেয় আজো
কোথায় পড়ছো এখন:বুয়েট নাকি ভার্সিটি?
লিজার সাথেও যোগাযোগ নেই বহুদিন
সময়টা চলে যায় বড় দ্রুত, কেমন আছো তুমি ফালগুনী?

বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

কত দিন সহ্স্র সাল আবহমান-
ধুম ধাম নাম ধাম অনুমান,
কার এত ভাগ্য হল; সেইতো পেল সুনাম |
অবাক অচীন আগামী দিন,
কেউ বাকী থাকবেনারে সেইদিন-
কি হবেরে? কি অঝরে!ওরে বলনা ||

ছন্দ নাই; তবু বন্দনা বন্ধ হবেনা,
চাতক পাখির মত চেয়ে থাকা-
অচীন আজব আগামীর পথে,
যেখানে শুভ্র দিন অনুভব অবিচল-
তার সাধনার অন্ত হবেনা ||
দন্ধ নাই; তবু চন্দ্রিমা চন্দ্র দেখেনা,
শতক আখির যত চেয়ে থাকা-
কঠিন তলব চালানীর পথে,
সেখানে তীব্র দিন পাবে সব অবিকল,
তার সে দিন কেউ থামাতে পারবেনা||
আজ অনেক দিনের চেষ্টা এ-
তোমাকে বর্ননা বর্নিল বানে,
রাঙ্গীয়ে রাঙ্গা সুখ স্বপনে,
বোঝাতে বানী বর্ন স্নানে-
সাজাতে চাই যেন বুঝুক সবাই;
তুমি অপরূপ শতরূপ অনন্যা ||
তিস্তা পাড়ের মেয়ে গো.......
মন কেড়ে নিলো গো.....
ইতিউতি চায় গো...
আমারে যে নাচায় গো....
আমি এখন কি করি গো...
ফালগুনী যে তার নাম গো...
জীবন আমার গেলো গো...
কি জানি কি হয় গো...
ভুলে যাওয়া বেহালার করুণ রাগিণীরা
তোমার চোখে ক্ষয়িষ্ণু স্বপ্নের মতই ধরা দেয়;
শ্যাওলা পড়া পুরনো অট্টালিকার ভাঁজে
প্রতিধ্বনি তোলে অচেনা অশরীরী।
তেমাথার মোড়ে মাথার চুলে জট পাকানো
সেই যে পাগলটা- আজও আছে দাঁড়িয়ে,
এখনও সে স্বপ্ন বিলায়- এই শহরের বুকে।
ধূলিমাখা এ শহরের পথে প্রান্তরে-
ছুটে চলা দাপুটে হাওয়ার ভাঁজে ভাঁজে
নেচে বেড়ায় ছায়া ছায়া আঁধারের নিরেট কঙ্কাল,
গলি থেকে রাজপথ, পুরনো জঞ্জালের ফাঁকে
খোঁজে প্রদীপ-শিখার হারানো ইতিহাস;
নীল খামে বন্দী পাথুরে সভ্যতা, মাঝে কিছু
ফেলে আসা অমীমাংসিত জীবনের ভগ্নাংশ।
শীষকাটা বাতাসে ঘুমায় অবাঞ্ছিত হৃদপিন্ড-
যে মন স্বপ্ন দেখতে জানে না,
যে হৃদয় মরে গেছে বহু আগে;
পাশে গাছের ডালে ঘুঘুদের কোরাস,
যার সাথে এই হৃদবিহঙ্গের কোনই তফাৎ নেই।
একটু দূরে রঙিন আলোর ঝলকানি!
ঘুমন্ত নগরীতে জেগে ওঠে রাতের পানশালা,
অচেনা অপ্সরীরা মেকি সজ্জায় নিশি জাগে;
ভেতরে ভেতরে অবশ্য টের পায় গোঙানিটা-
জলন্ত অগুনের মত।
পথের তৃষ্ণায় এক ফোঁটা জল হও
ক্রমাগত স্বপ্ন জালে তোমায় বুনবো
ব্যস্ত মাকড়সারমতো।
এক বার ভালোবাসি বলো
সব দুঃখ মুছে দেবো
এক ব্যথ্যা-ভুলানো ঠাণ্ডা হাওয়ায়
নিয়ে যাবো মেঘলোকে।
ভালোবেসে হাত ধরো
তোমাকে ফোটাবো চাঁদেরমতো
অসংখ্য তারার ভীড়ে
নৈঃস্বর্গের গাঢ় মগ্নতায়।
পথ ভালোবেসে কথা দাও
তুলে নিবো গন্তব্যে
পৌঁছে দেবো ভালোবাসার স্বর্গোদ্যানে।
পরম মমতায় ভালোবেসে ছুঁয়ে দাও
তোমাকে বুনবো
গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘে ডাকা রুপোলী তারায়।
বুকের ভেতর ঝর্ণা হও
তোমাকে বইয়ে নেবো পাথর কেটে কেটে
বুকের রক্তের জলে ধুয়ে।
শুধু এক বার পাশে এসে দাঁড়াও
ভৌতিক আঁধার শুষে নেবো
আলোকিত সূর্য হয়ে।
কোন সে স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যায় জানো কি তুমি?
বন্ধনহীন কোন সে বাঁধন ? অদৃশ্য কোনও সুতো,
ভালোবাসার দীর্ঘ,সুক্ষ ,রঙিন সুতো ।
হঠাৎ উঠলে ঝড় ,জানালা বন্ধ করার আগে
দমকা হাওয়ায় তোমার ঘরে ঢুকে পড়ে যে চূর্ণ,
কিছুটা তার ধুলো বালি , কিছুটা আমি,
কোনও একেলা দুপুরে দুরের বাশির সুরে উদাস হও তুমি,
সে বাঁশি কে বাঁজায় জানি তা আমি,
রাতের বিছানায় খড় কুটোর মতো ভেসে যাও তুমি ,

মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫

তৃষ্ণার হাহাকারে কেঁদে ফেরে মন
বুকের ভেতর দূর্বার কালবৈশাখী ঝড়ে
নিজেকে নিজেই ভাঙ্গি আঘাতে আঘাতে
অন্ধকার নিমজ্জিত দুঃখ রাত্রিতে।
আলোকিত জীবনের দ্বার
খুঁজতে খুঁজতে দুহাতে জড়াই অন্ধকার,
দুঃখের বোবা পাথর জীবনের দরজায় সাঁটা
আলোহীন বেঁচে থাকা।
নিষ্ঠুর বিষাদের কাঠ-ঠোকরা
খুবলে খায় জীবনের সব সঞ্চয়।
বুকের মধ্যে বৃষ্টি নামে
স্তব্ধ রাত্রি জুড়ে।
দুঃখের বলাকারা ঝাঁকে ঝাঁকে
ঝাঁপ দেয় বুকের আকাশে,
বয়ে যায় বিরহী বাতাস প্রবল প্রতাপে।
হেমন্তের মেঘ উড়ে যায় অজানায়
নিঃসীম আঁধারে ডুবে চরাচর,
কষ্টগুলি জমা রাখি ছায়ার কাছে,
চাঁদ নিভে যাওয়া রাতে।

রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৫

আমার উপস্থিতি হয় যদি তোমার কষ্টের কারণ,
কথা দিলাম হবে না আর তোমার সীমানায় আমার আগমন ।
সাজিয়ে নিও নিজের মতো তোমার ভুবন,
করবো না আর তোমায় জ্বালাতন ।
সময়ের পরিক্রমা অলি ফিরে আসে
জানি আমি বন্যার মতো ছুঁতে পারি না
তবু ইচ্ছে করে রুমির ছন্দে
আমি বাঙ্গাল কবিতা লিখি
গাঁজার ধোঁয়া উড়ে ঙ ঢঙে
কথাবলি শব্দ হয় না যেন চুপকথা।

অনিমেষ চেয়ে আছি
গোধূলির আবীর মেখে
দুরন্ত ঘোড়ার গতি নেই
চলি শামুকের মতো।
স্বপনের কারিগরের মতো
মুক্তচিন্তা কর।
মুসার মতো জ্বলতে দেখিনি তুর পাহাড়
তবু ইচ্ছে করে দেবের মতো
কান্না জড়িয়ে বন্ধুর খোঁজ নেই
রিপার কবিতায় জটিল ছন্দ হয়ে
সহজ কথায় বলে দেব
আমি কাশফুলের চারণক্ষেত্র
তুমি হাহা করে হেসে উঠো না।
ইচ্ছে করে নিভৃত স্বপ্নচারী হয়ে
মহুয়ার খোঁজে নদের চাঁদ
অদৃশ্য বিদ্রোহী হই চে’র ক্ষিপ্রতায়
হিমু হয়ে খুঁজি বৃন্দবাসি বৈকুণ্ঠকে,
আমি দেখেছি তাকে বনলতার
খাঁচার ভেতর অচিন পাখী হয়ে।
স্বপ্ন ভেজা চোখে কষ্ট নদীর ঢেউ
আছড়ে পড়ে কূলে ।
বুক ভরা কষ্টের গন্ধরাজ
অবিরাম কষ্ট গন্ধ ছড়ায়।
তৃষ্ণার আগুনে পোড়ে দু’কূল,
দুঃখ নদী পোড়ে না।
নিকষ কালো রাতে
প্রতীক্ষার আগুনে পুড়ি।
অনন্ত কাল ধরে
ভেসে চলেছি মৃত্যু স্রোতে ।
তুমি আজ সত্যি সত্যি স্বপ্ন-মরিচিকা,
আমার দিক্ ভ্রম জীবনে।
শূন্যতার বুকে মুখ রেখে
গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত
গোধূলীর শেষ আলোক রশ্মি আমি।
তুমি আজ আলোকিত
অন্য কোন গ্রহে ।
রিক্ততার দহনে আকন্ঠ ডুবে থাকি
বিষণ্ণতার জ্বলন্ত হৃদঅনলে।
এখানে সূর্য নেই,চন্দ্র নেই,দিন-রাত্রি নেই,
কেবল অন্ধকার আর অন্ধকার।
মৃত্যুর ক্ষুধার্ত ঈগল ডানা মেলে
উড়ে আকাশ জুড়ে,
স্বপ্নঘোর কাটলেই দেখি আমি একা বড় অসহায়,
তুমি ব্যথিত শূন্য আমার ভুবন ভাসি দুঃখের ভেলায় -
খুলিয়া দক্ষিণদ্বার কল্পনায় হই মগ্ন তোমার ভালবাসায়,
তবুও তোমায় ভালবাসি-বেঁচে আছি তোমারি আশায়।
যদিও সন্ধ্যা নেমে এসেছে আমার জীবন বেলায়,
জীবন প্রদীপ নিভু-নিভু তোমার শত অবহেলায় -
ক্লান্ত-স্তব্ধ আমার ভুবন তোমার প্রেম পিপাসায়,
তবুও মন পিঞ্জরে আছো প্রিয়া গভীর ভালবাসায়।
না' হাসাতে চাইলেও আমি প্রাণ খুলে হাসবো,
তুমি যদি কাঁদাতে চাও মনের সুখে মন খুলে কাঁদবো-
নিঃশ্বাস ত্যাগ না' হওয়া পযন্ত যদি জ্বালাও আমি জ্বলবো,
তবুও বিদায়ের ক্ষণে চিৎকার করে ভালবাসি বলে যাবো।
আজো স্বপ্ন দেখি সন্ধ্যার লক্ষ্মী হয়ে তুমি এসেছো,
প্রেম পরশে গড়া আমার ভাঙ্গা কুড়ে ঘরে-
সন্ধ্যাতারা হয়ে জ্বল-জ্বল করে জ্বলছো,
প্রেমহীন হৃদয়ের শূন্য আকাশ জুড়ে।
তোমার মন সাগরের শান্ত জলে খুব নীরবে,
ভাবনায় ধীরে-ধীরে আমি প্রেম এঁকে যাবো-
ভাসিয়ে আমার বিশ্বাসের তরী বিশ্বাস বিলিয়ে,
তোমার মনের রাজপ্রাসাদে বিশ্বাস স্থাপন করে নিবো।
স্নেহবন্ধনে বাঁধবো তোমায় দেবোনা ছেড়ে যেতে,
যতই করো ছলচাতুরী খুব যতনে অন্তরে নিবো গেঁথে-
শুধুই দুঃখের স্মৃতিটুকু সুখ ভেবে সুখী হবো প্রতি রাতে,
তবুও ভুলে যাবোনা তোমার দেওয়া শত আঘাতে।
ওইখানে, ঠিক ওইখানেই ছিল তাঁর ঘর
ছানি পড়া দু’চোখ ঝাপসা হয়ে ওঠে-
কিছুই নেই এখন আর- ঘর, যৌবন কিংবা সময়!
মনে পড়ে একদা কেটেছে দিন-
সবুজ বৃক্ষের ডালে ডালে পাতায় কিংবা ফুলে;
রাত জাগা চাঁদের স্নিগ্ধ আলো বুঝতে পারে না এখন আর
হুক্কা হুয়া শিয়াল ডাকে দূরে কোথাও-
জানান দেয়- গভীর হয়েছে রাত!
বসন্ত আসে, আবার চলেও যায়; অগোচরে-
বৃষ্টি পড়ার শব্দ কান পেতে শোনে-
আহা! কি সময় ছিল সেগুলো
ভাঁজ পড়া কপালে চিন্তার রেখা- কখন ডুববে চাঁদ!
ফুরাবে সময়, শেষ হবে খেলা।
একদিন যৌবন ছিল, লড়েছে কত-
বানের সাথে, ঝড়ের সাথে
এখন শুধুই স্মৃতি, মনে পড়ে; ক্ষণে ক্ষণে
বুকের ভিতরে টের পায় ঢেউয়ের শব্দ -
কাঁপা কাঁপা পায়ে এসে দাঁড়ায়
ভাঙা পাড়ে-
ওইখানে ছিল তার ঘর, মাত্র কিছুকাল আগে-
মনে পড়ে; সব
ভাঙ্গনের খেলা দেখেছে কত এ দুটি চোখ!
ঝাপসা হয়ে আসে, বারে বারে;
ধূসর দৃষ্টি মেলে তাকায়
পার হয়ে গেছে সুদীর্ঘ কাল,
জীবন সায়াহ্নের এই বালুকা বেলায়
বয়ে যায় সময়, সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা করে রাত্রি গড়ায়
জীবনের চাকা ক্ষয়ে ক্ষয়ে থমকে দাঁড়ায়;
নিষ্ঠুর নিয়তি-
কুঁচকে যাওয়া চামড়ার ভাঁজে ভাঁজে খুঁজে ফিরে
ফেলে আসা দিন-
হারিয়েছে কত সাথীরে! কেউ প্রহর গুনছে আজ
তারই মত-
খুঁজে ফিরে উজ্জ্বল আলো; ওখানে আলো নেই!
মেঘলা আকাশ, ফ্যাকাসে, থমথমে।

বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৫

দূরন্ত ঝড়ে ছেঁড়া
ভালোবাসার মানচিত্র,
জোড়া দিই
কৃষ্ণ গহ্বর রাত্রে।
দুঃস্বপ্নের নিকষ কালো
আধাঁরে নিমজ্জিত,
স্বপ্নের বলাকারা
মরে পড়ে আছে।
জলোচ্ছ্বাস রক্ত কণিকায়
তৃষ্ণা এবং স্তব্ধতায়,
পাশাপাশি দুজন
তবু অনন্ত মৌনতা।
রাক্তাক্ত পায়ের চিহ্নে
পথের দূরত্ব লিখা,
আশ্চর্য্য বোধের
তলানিতে বর্তমান।
শিমুল তুলোর মত
উড়ে যাওয়া মুখ,
রঙ ধনু হয়
বিরহের আকাশে।
বূকের ভেতর দুঃখ মাখা
এক গুচ্ছ পাতা,
অবাক উঁকি দেয়
অস্ফুট বিষ্ময়ে।।
অকল্যানের ছায়া কাঁপে
স্তব্ধ চোখের তারায়,
দুঃস্বপ্নের রাতে
শ্বাসরুদ্ধ জীবন।
অর্থহীন পৃথিবীতে বেঁচে থাকার
অদম্য ইচ্ছাটাও ফিকে হয়ে আসে ক্রমশ,
আর পাথর ভাঙার মত করে বুকের ভিতর
ক্রমাগত বাজে নিষ্পেষণের হাহাকার!
অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ায় কেবলই
ভুলেভরা সময়ের হিসাব মিলাতে
নিঃশব্দ আর্তনাদগুলো অলক্ষ্যেই
নিজের ভিতরে গুমরে গুমরে কাঁদে।
নিজের সাথেই চলে বোঝাপড়ার অদ্ভুত আয়োজন
অব্যক্ত অনুভূতি জানান দিয়ে যায়
আধখানা চাঁদ কখনও ঢেকে দিতে পারেনা
বেদনার চাঁদরে মোড়ানো জমাট অন্ধকার।
অপ্রকাশিত অভিমানে ছুটে চলে
লক্ষ্যবিহীন পথে, রঙমেখে সং সেজে কেউ কেউ
ভাল থাকার সুনিপুণ অভিনয় করে যায় একাগ্রচিত্তে।
ঠুনকো কাগজি সম্পর্কের জের ধরে
এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাপিত জীবনটাকে
একসময় বড় অপাংক্তেয় মনে হয়।
হৃদয় পটে ভাজ করে রাখা শব্দরা - ফিসফিস
এক পশলা অপলক মুখশ্রী, শিশিরস্নাত সেই ভোরে
আমার ভেতরে ঘটায় রক্তপাত।
আমার সেই সদ্য জন্মানো কবিতাটিকে
আমিই ভালোবেসে জড়িয়ে নেব - সংগোপনে।
ধুমায়িত কফিতে মোড়ানো প্রেম ভাসে ইথারে
সাদা কাগজ আর কালো বলপয়েন্টের রক্তে জাগে ঢেউ
শব্দের মিছিলে যোগ দিতে চায় কাঁপা কাঁপা হাত
তবুও শুরুতেই থেমে যায় হাত শূন্যেই -
এক জীবনের ভালবাসা তুচ্ছ মনে হয় , অবলীলায়।
একটি আনকোড়া কবিতার জন্য আমি শূণ্যতায় ঝাপ দেই ,
হাওয়ায় ভাসতে ভাসতেই আমার মনে পড়ে যায়
কি যেন বলব ভেবেও বলা হলো না তোমায়।
ভরা বুক পকেট আমার প্রেমহীন।
বিজয় সরণি ধরে তোমার হেঁটে যাওয়ার কথা শুনে'
আমি চেয়েছিলাম শিশির হতে বিজয় সরণির ঘাসে।
সপ্তম স্বর্গে বসে তুমি চোখ রাখো লাল সাদার খেলায়,
অন্যমনস্ক তোমার একটু আংগুলী হেলায়,
প্রবল গোপনীয়তায় বেরিয়ে আসে আমার গোপনতা ।
তীব্র সুখের অসুখে আমি ভুলে যাই হাইফোবিয়া
ভুলে যাই একটা টেবিল , ভুলে যাই বাসাবাসি পাশাপাশি,
ভুলে যাই ফ্রেন্চ ফ্রাই, ভুলে যাই কালো কফির সাদা পেয়ালা।
দেখি - অজস্র চোখ মেলে চেয়ে আছে সুন্দর সন্ধ্যাটা ,
অপার্থিব নির্জন বিষন্নতা আমায় ডাক দেয়।
উন্মনা হয়ে খুঁজেছি যারে, তার ছায়া আজ কত সহজেই প্রতিভাসিত
অথচ আমি তার নাগালের বাইরে!
শক্ত গাঁথুনিতে ঘেরা প্রাচীর – আমি পথ পাইনা খুঁজে
আমার চারপাশে খেলা করে কতশত সোনার জিঞ্জির!
তোমার স্পষ্ট আবেগী আহ্বানে নেমে এসেছিল পাণ্ডুর চাঁদ
মূক সভ্যতায় লেগেছিল মেহেদীর রঙ!
ভালবাসি, ভালবাসি তোমায় স্নিগ্ধ জলের মত
অনুভবের অনুরণনে সুশোভিত করে রেখেছি সাদাকালো মন
নির্মল মরনেও ভাসবে প্রদীপ—ভাসাবো প্রদীপ
শুধু ভালবাসার আলিঙ্গনে –হোকনা মিলনে‘র আশা যতই ক্ষীণ!
আহা জীবন!
সুখান্বেষণ করতে করতে, সায়ংকালে তোমার সান্নিধ্য বুঝি পেয়েই গেলাম!
কিন্তু প্রহরীর চোখ ফাঁকি দেই কি করে! পাথুরিয়া মন যে তার!
বৈষম্যের টানাপোড়েনে প্রেমের প্রানশিখা বুঝি এভাবেই নিভে যায়!
পরাস্ত নাবিক হয়তবা নোঙ্গর ফেলবেনা আর কোন বন্দরে
রোদের ঝিলিক মিশে যাবে হয়ত খেয়ালি মেঘের আড়ালে!
তাতে কি!
মানুষ বলেই হয়তো, মানুষের চলে যাওয়া মেনে নেই,
পছন্দের জিনিষটি খুঁজে না পেলেই কষ্টে কুঁকড়ে যাই।
মানুষ বলেই, বিবেক জেগে উঠে কোন এক মধ্যাহ্নে
অবহেলীত চোখের অসহায়ত্বে প্রান কেঁদে উঠে।
আমি মানুষ বলেই, বাসনায় আমার কামাতুর দৃস্টি নুইঁয়ে আসে।
পাওয়ার লোভে চোখ চিকচিক করে উঠে।
আমি মানুষ বলেই,
মন খারাপ হয়, কষ্ট জাগে চোখের পাতায়।
ছুটে যাই নদীর পাড়, কিংবা সবুজ ঘাঁশের মাঠে।
মানুষ বলেই,
আনন্দে হাসি, না পাওয়ায় কাঁদি।
ছোট ছোট ভুলে ভেঙে পরি, শোকে মুহ্যমান হই।
আমি মানুষ বলেই, রাতের আকাশে নক্ষত্রের মেলা এত ভালো লাগে।
ঘাঁশ ফড়িং কিংবা প্রজাপতি হয়ে মন উড়ে যায় বনেবাদাড়ে।
আমি মানুষ তাই,
ভালবাসি।
মানুষ বলেই কোমলতায় কুঞ্চিত আমি।
কারো কঠিন স্বর কিংবা বন্ধুর মলিন মুখ,
বিষাদের ঝড় নামায় বুকে।
তোমার চাঁদ-বদনের প্রাণবন্ত হাসি
বসন্ত আনে আমার ছন্দময় মনের
রোদেল চাতালে!
কী এক নাম না জানা আকর্ষণ
আমাকে টানে তোমার দিকে, আর
এই উদ্দাম আমার মাঝে
নড়ে-চড়ে উঠে
এক প্রকার স্পর্ধা হীন স্পৃহা!

খুশির কল্পনায় মত্ত রঙ্গিন দিনে
মধুর শব্দ চয়নে মগ্ন আমি
তোমাকে নিয়ে লিখছিলাম
সিগ্ধ প্রেমের কবিতা।
অকস্মাৎ তুমি এসে দাঁড়ালে
আমার উদবেল শরীর ঘেঁষে!
তোমাকে আলিঙ্গন করতে গিয়ে
হঠাৎ সম্বিৎ ফিরে আমার!
মূলত তুমি ছিলেনা আমার পাশে,
তোমার মতো কেউ আসেনি
আমার সামান্য ঘরে।
আমার লাগামহীন খুশির কল্পনা
তোমাকে নিয়ে সৃষ্টি করেছে
স্বপ্নীল প্রেমের কবিতা।
কেউ একজন ভুল করে হাতে হাত ধরে বলেছিলো
আমি তোমাকে ভালোবাসি না!
এ মন, সেই মনের কাছে হাত পাতে; ভালোবাসায়
মনও ফিরিয়েছে তাদের শুনিনি কোনকালে
তবু আমি বারবার মনের কাছে মন চাইছি, মনের দেখা পাবো বলে,
কেউ যায়, কেউ আসে, কেউ আবার হারিয়ে পড়ে ঘূর্ণাবর্তে
আমি দেখেছি তাদের যাদের কেউ মনে রাখেনি
আমি শুনেছি তাদের যাদের কেউ একজন মনে করে বলেছিলো
আমি তাদের মনে রাখতে চাইনি অথচ বারবার মনেই উঁকি মারে।
তবু মন, বিচিত্র মন ফের ভুল করে, ভুল করে ভালোবাসে
ভালোবেসে কাছে গিয়ে থমকে যায় আবার ভালোবাসে
শুনেছি, ভালোবাসার কাল মধুর কোনো এক
দিয়ে যায়, শুধুই দিয়ে যায়-
তাই দিন গড়ালে দিন আসে রাতের হাত ধরে।
রাতের গতরে বাস যার সে কানে কানে বলে
কেউ একজন ভুল করে হাতে হাত ধরে বলেছিলো
আমি তোমাকে ভালোবাসি না!
স্বচ্ছ তার জলের মত শরীরের রহস্য জানতেই
পৃথিবীতে এসেছিল প্রথম ভোর ......
কত আগে তারে ভালবেসেছিলাম
আজ আর তা মনে নেই।
গোপনে গোপনে কত অনুভূতি
জন্মেছিল তোমার জন্য! মনে নেই।
কবে খেলার ছলে আধাঁরের বুক চিরে
এক টুকরো আলো বের করে এনেছিলাম !
ফালগুনী রাতে;
দেখেছি তারে অন্ধকারের সাথে।
যখন যুগল পেঁচা সবুজ চোখ মেলে
আধাঁরে বিস্ময় খোঁজে সৃষ্টির আড়ালে।
দেখি নীলাভ দুটি চোখ তার,স্বচ্ছ জলের ন্যায় শরীর
চুপে হাওয়া এসে বলে গেল ,- “এই মানবী নয় এ
পৃথিবীর।”
হয়ত সে ও আমাকে ভালোবেসেছিল;
আজ ও বাসে !
তবু কেউ আমায় মনে রাখেনি।
শেষ বিকেলের নরম রোদের মত
তার দেহের ঘ্রাণও মুছে গেছে এ প্রাণ থেকে
অত:পর
ঘুম গিয়েছিল ভেঙে
হেমন্ত নক্ষত্রের রাতে
অনেক পুরনো সে রাত।
সে রাতে পূর্নিমা ছিল কিনা . . . . . . . . . মনে নেই।
তবু সেইসব দিনরাত্রির ঘ্রান লেগে আছে বুকে
যেইসব দিন তার মুখ দেখা হত .............
ঝরে গেছে সময় ঘাস মাটির উপর
সুর্যাস্তের শেষ রং মুছে দিয়ে শেষ পাখি ফিরে গেছে নীড়ে।
ধূসর স্মৃতিগুলোকেই বারে বারে স্মরি,
শুধুই মিছে মায়াজাল রোমন্থন করি।
শত ভাবনা মনের গহীনে দিয়ে ঠাঁই,
নিত্য-নতুন স্বপ্নের জাল বুনে যাই।
আশা-নিরাশা দোলাচলে সাহসই পুঁজি
মিথ্যে বিসর্জন দিয়ে সত্য নিয়েছি খুঁজি।
কন্টকময় পথের আমি অজানা পথিক,
জানি, স্রষ্টাই দেখাবেন সর্বোত্তম দিক।
বিমূর্ত এ রাতে জানালার কার্নিশ ধরি,
সময়ক্ষেপনে তোয়াক্কা আজ নাহি করি।
চকিতে সেই প্রিয় মুখগুলো চোখে ভাসে,
ভুলতে গিয়েও আবার ফিরে ফিরে আসে।
রাতের নিস্তব্ধতাই এখন প্রিয় সাথী,
অন্ধকারের নির্জনতাকে তনুতে মাখি।
নির্ঘুম লোচন এর ঝাপসা শুন্য দৃষ্টি
ভীত-সন্ত্রস্থ আমি, এই বুঝি ঝরে বৃষ্টি।
ক্ষনিকের ভাবনাকে ঠেলে দূর কর’ত
নিজেকে উজ্জীবিত করতে নিজেই রত,
অসাধ্য ঠেকে, দুর্বোধ্য সব, শুধু নিরাশা
মুক্তি কি তবে নেই ললাটে? সব দূরাশা!
ক্রমাগতো তোমাকে কেন্দ্র করে
বৃত্তাবদ্ধে ঘুরতে থাকে আমার দুরবর্তী
নক্ষত্রপঞ্জী ভালোবাসারা;
তোমার বাঁকা চোখের কাছে
কত নদী শুনিয়ে গেছে দুঃখের গাঁথা;
তবু তোমার মাঝেই ডুবেছি ভেসেছি;
খেলেছি
অতল জলের প্রেম খেলা।

শরতের যে আদল আমায় আসমান দেখায়
সে তুমি;
তোমার মাঝেই শারদীয় কাশফুল হয়ে
ফুটে থাকে দেবী দুর্গা;
তার সকল শুভ্রতা নিয়ে তুমি আমার।
তোমার চোখের অবেলা রোদের মত দৃষ্টি
আমাকে কাছে ডেকে বলে
তুমি আমার,
আয়নায় চকচকে তোমার যে কামিনী প্রতিবিম্ব
সে আমার;,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
সদ্যজাত খোঁচা খোঁচা দাড়ি: ভীষণ অগোছালো
শেভিং ক্রীমের স্পর্শে, রেজারের স্পর্শে পায় অনুপম সুখ
উদ্বিগ্ন মনে উতলা বালিকার চাঁদের ন্যায় মুখ
মরিচা ধরে প্রেমে,ক্ষুধিত কান্নার করুণ আর্তনাদে
থমকে গ্যাছে জীবনের গতি,পালে লাগে না হাওয়া
ধুত্তোরি,তার চেয়ে ভালো ঝাঁপ দিয়ে মরে যাওয়া

ধুত্তোরি,কিছুই লাগে না ভালো
কী যে কলিযুগ এলো?
ফুল ধরেছে গুটিকয়েক পাশের বাড়ির টবে
গাছের পাতা ঝরে পড়ে,ডালপালা মরে জ্বালানী কাঠ
সবকছু যেন ঝড়ে পড়ে যায়,
মেঘবালিকার স্বপ্নগুলো মরে যায়
শশ্মানের চিতায় পুড়ে জীবনের ইচ্ছাগুলো
ভেজাধূলো উড়ে যায়,
স্মৃতির এ্যালবাম জানিয়ে দেয় ভুলগুলো
আলো নেই,শীতের বিকেলে সূর্য লুকালো
কুয়াশার আস্তরণে ঠাণ্ডা লাগে,গ্রীষ্মকালই ভালো
পেটে মাল নেই, অভাবে পাঁজরে থ্যাৎলানো দেহ
পাথর দিয়ে বেঁধে রাখি মৌলিক ইচ্ছাগুলো
থমকে যাই:খেতে পাই না কিছু, গায়ে লাগে হাওয়া
ধুত্তোরি, তার চেয়ে ভালো লজ্জার দাবদাহে মরে যাওয়া।
দুঃখের অশ্রু বিন্দু বিন্দু গড়িয়ে পড়ে মাটিতে
ভেজা ধূলো উড়ে যায় বহুদূরে উদ্দাম বুনো হাওয়ায়
এদিকে,একটি বিড়াল বিশ্রাম নিচ্ছে পাশের বাড়ির ছাদে
প্রকৃতি দুঃখ পাবে ক্ষুধিত কান্নার করুণ আর্তনাদে
টেবিলের উপর পড়ে থাকা ঘড়ি একটানা বেজে যায়
শ্যাওলা জন্মেছে বাড়ির চারপাশের দেয়ালে
এলোমেলো ভাবনাগুলো কিংকর্তব্যবিমূঢ়
উতলা বালিকার দৃষ্টির তাপদাহে পুড়ে যায় ইস্পাত মন
একাকীত্ব ঘোঁচানোর ভান করে তাই-
করতে থাকি সিলেবাসের সব অংক,
অসীমতক সমষ্টির ধারা,
মেলে না যদিও,
আড়ালে থাক যতটা সময়
মনে হয়...আমি সঙ্গাহীন কোন অস্তিত্ব,
নীরব-নীথর কোন শুন্য জগতে রুদ্ধ, একা,
তোমার গ্রীবাদেশে জ্বলতে থাকা লাস্যময়ী তিল'টিকে
আমার সিক্ত ঠোটে 'হ্যা' বলতে শেখানো
আমি অভুক্ত-ক্ষুদার্ত
এর চেয়ে তোমার চোখের কৃষ্ণ-গহবরের
আকর্ষিক শক্তি নির্নয় সহজ
তুমি চাইলেই-আত্মঘাতি মহাকাশচারীর ন্যায়
এক ঝটকায় হারাব সে গহব্বরে,
আর সহজ...একটি একটি করে তোমার এলোচুল গোনা
স্নায়ুকোষহীন সেসব চুল
জানি ঠিকই তোমার দেহে পৌছে দেবে-
আমার কম্পিত আঙ্গুলের ভালবাসা,
তুমিও কি পারবে থাকতে স্থির?
স্বস্তা প্রলয়হীনা জীবন আর লাগে না ভাল,
আমি ডিঙ্গি নৌকার মাঝি হব,
তুমি সর্বনাশী পদ্মা হও,
ঝড় ওঠার অনেক আগেই- কথা দিলাম ঝাঁপ দেব ও'বুকে!
এসবের স্বপ্ন দেখতে তুমিই আমায় শিখিয়েছ,
হে বন্ধু! তবে কেন আজ আড়াল হও?
তবে কেন দুরে রও?
কেন!
যদি ভুল করে আসে কেউ
এই পথ ধরে
তবে পথ 'পরে
দেখে নিও আমার কবিতা
না পড় তবু হাতে তুলে নিও
বলো, হে বন্ধু তুমি কোথায়?

আঁধারের পথ যাত্রী আমি
আঁধারে এসেছি আঁধারেই চলে যাচ্ছি
রেখে যাচ্ছি পদচিহ্ন
যদি কোন দিন কারো মনে পড়ে
এই অভাগারে
কবিতার হরফগুলো ক্রমশ ঝরে পড়ে
ঝরা পাতা কিংবা পালকের মত
কবিতারা প্রতিনিয়ত আর্তচিৎকারে
আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে
কবিতাগুলো যেমন বুঝেনা হেমন্তের শুভ্রতা
তেমনি বুঝেনা হৃদয়ের আকুলতা
আমি আহত হৃদয় নিয়ে দেখতে থাকি
কবিতাগুলোর করুণ সমাপ্তি ।
যদি অশ্রুগুলো বর্ষণের বেগে
দুচোখ থেকে ঝরে যায়
আকাশের তাতে কিইবা এসে যায় ?
যদি স্বপ্নগুলো চিরতরে হারিয়ে যায়
জীবনের সকল অধ্যায় থেকে
জীবন কী তাতে একটুও থেমে যায় ?
শরতের সফেদ মেঘগুলো কী জানে
কী ব্যথা বুকের বাঁপাশে ?
সারি সারি কাশফুলগুলোও তো জানেনা
কবিতার কষ্টার্ত কথামাল !