রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সেজেছিলো সে পরাগায়নের উচ্ছাসে সেই রাতে
হাত খানি নিয়েছিলো জোর করে টেনে
কলসের ভাঁজে, পদ্মমূলে, হা-করা ঝিনুকের মুখে
বলেছিলো- ছুঁয়ে দ্যাখো চাতক, কত সুখ লুকিয়ে
রেখেছি আমার এই হিয়ার মাঝে.........
বহুদিন পর দেখা হয়ে গেলো আজ, তার সাথে
শরৎতের শাড়ির ভাঁজে রেশমী চুড়ির উল্লাসে।
খোঁপার বেলীফুল কারুকার্য চিবুক ছোঁয়া ঘামের গন্ধ
মনে পড়ে গেলো সেই অতীত রাতের কথা
যাকে ছুঁয়ে বলেছিলাম চাঁদকে ডেকে
জোছনা চাইনা রুবি আজ চাই শুধু তোমাকে।
ডেকে এনে একে একে তুলে নেই মনে ,
জীবন পতাকার নিঃশব্দ উড়ানে
এগিয়ে দেই নতুনের আশ্বাস ।
যাবার আগে আর একবার এসে দাঁড়াই
খোলা আকাশের নিচে
পিছে পিছে আরো পিছে গিয়ে খুঁজি
নিকষ অন্ধকারে কিছু অরূপ রতন ।
যেখান এখনো ভেজা পাওয়া না পাওয়ার ওমে
একা একা বসে গোনা বিষণ্নতার আলোড়ন।
চেয়ে নিই-কুয়াশায় লিখে রাখা হৈমন্তিক কথা
যেন আশা নদী বাকেঁ বাঁকে পলি চরে ওড়া
এক ঝাঁক বালু হাঁসের নিস্ফল বারতা।
সময়ের পালকি দুলকি চালে ছুঁয়ে যায় রাজপথ
ঘর বাড়ি মাঠ ফেলে ।
ধীরে ধীরে আবছায়া চেনা গলি পথ;
হারাবার আগে আগে যেন দুহাত মেলে ।
বালি দিয়ে নির্মিত স্থাপত্যের মতই
ক্ষণভঙ্গুর আশার স্বপ্নগুলি
ভাঙ্গা মনের দেয়ালে কল্পনা দিয়ে
মিছে রঙ তুলির আঁচড়ে আঁকিঝুকি করি ।
হিসেবের খেরো খাতায় যৌবনের নির্বাসনে
জ্বলে অন্তর ,পোড়ে কপাল ।
নিয়ম ভেঙে - ঐ যে দুরের গিরিশৃঙ্গের
যেখানে দাঁড়িয়েছি , সেখানে শুধুই অঙ্গার
অশান্তির উনুনে নিজেকে পুড়িয়েছি বারবার।
দীঘল কালো রাতের দুঃস্বপ্নগুলো শপথ নিয়েছে
যাত্রায় শুরু আছে-শেষ নেই এই কঠিন সময়ের
ঘরে বাইরে সবখানেই সামনে এগুনোর পথ
একেবারেই রুদ্ধ ..................।

সকালের কাছে চেয়েছিলাম
একটু খানি রোদ,
মুখ ফিরিয়ে চেয়ে নিল
গত রাত্রির শোধ।
সকাল দুপুর সন্ধ্যা রাতে
তাকিয়ে তোমার চোখ,
নীরবতায় আমার প্রেম
ভুলে নির্বাক শোক।
সকাল ঘনিয়ে দুপুর এলো
রোদ মেলেনা তবু,
ব্যস্ত শহর ঘুমায় অবেলায়
চোখ মেলেনা প্রভু।
অনেক কথা বলতে চেয়েছি
হয়নি কিছুই বলা,
তোমার চোখে তাকিয়ে ছিলাম
কাটলো সারাবেলা।
সন্ধ্যা এলো নীল আকাশে
সাথে লালের আভা,
তোমার আমার ভিসুভিয়াসে
সুপ্ত রাতের লাভা।
রাত এলে চাঁদ হাসে
তোমার হাতে হাত,
কিছুই আমার হয়না বলা,
ব্যর্থ পূর্ণিমা রাত।
ফিরে এসো আবার আমার দু'বাহু বন্ধনে।
এমন আবেগহীন হয়ে পুড়িয়ে মেরো না আমায়
ভালোবাসার লেলিহান শিখায়।
আমি আজো অপেক্ষায় আছি তোমার।
আমি ছায়া পেতে চাই তোমার আচঁলের,
আমি শব্দ শুনতে চাই তোমার উষ্ঞ নিঃশ্বাসের,
আমি গন্ধ পেতে চাই তোমার ভেজা চুলের,
একান্তই আমার করে পেতে চাই তোমাকে প্রতিটি প্রহরে।
অসংখ্য, অসংখ্যবার তোমাকে বুঝিয়েছি আমি
এভাবে ছিন্ন করে দিওনা আমাদের বন্ধন।
ছেঁটে ফেলো না তোমা থেকে আমাকে;
তোমার শূণ্যতা আমার অস্তিত্ব সংকটের কারণ হবে জেনো।
অন্য দিকে তাকিয়ে বলো, চলো উঠি!!!
আজ আর নয়!!!
আমি অবাক, ভীষণ অবাক হই তোমার এমন আচরনে।
এমনতো ছিলে না তুমি!!!
তুমি উদাস হও এসব শুনে,
শুন্য দৃষ্টে তাকাও আকাশ পানে-
যেখানে একাকী উড়ে ডানা মেলা সোনালী চিল।
সামান্য পিন দিয়ে গাঁথা মালা তোমাকে আবিভুত করতো যেখানে-
সেখানে বেলী ফুলে মালাও তোমার দৃষ্টি কাড়ে না!!
যেই তুমি প্রতিদিন দুটি রজনী গন্ধ্যা দিতে আমায়-
আজ সেখানে একটা ঘাষের ডগাও তোমার হাতে উঠে না!!
কেন এমন নিষ্প্রাণ, নিস্তরঙ্গ হলে তুমি??
এমন করো না লক্ষীটি?
নতুন করে সাজিয়ে ভেলা
নতুন রঙের মেলা
ফোলা ঠোঁটে লালচে আভা
দুষ্টমিতে ভরা।
এসব নিয়েই পথ চলা
চরাই উতরাই হৃদয় খেলা
মনের আকাশে হারিয়ে যাওয়া
দুষ্টু চোখের মিষ্টি খেলা
মধুর লাগে তাই ।
মান অভিমানে হারিয়ে যাওয়া
সোনালী ভোরের আলো
শেষ বিকেলে মনে হল
ভুলে যাওয়াই ছিল ভালো ।
আমার কাছে সুদূর হলো আপন
পর হলো ভালবাসার অন্তনিলে মিথ্যে সংঘাত
তুমি তো জানো ভালবাসায় কিছু মিথ্যে হয় না
সাগর জলের মতো উচ্ছাস নিয়ে প্রিয় আমার
যেন…..আমার হাতের স্পর্শে জীবন শান্তি
যেন….. নবীন পল্লব থেকে প্রানবন্ত সবুজ
যেন.....কলমের ডগা থেকে তার ভালবাসা দুর্জয় শব্দ প্রবাহ৷

ভালবাসায় কথা অফুরান হয়৷ মুহূর্ত গড়ে তোলে ইতিহাস৷
শব্দ গানের চেয়ে সুন্দর....শব্দ প্রবাহ তাই সুর হয়ে নামে
আপন মনে এই গাঙ্গে….ধুলা হয়ে ভাসে পৃথিবীর পথে
সন্ধ্যা হয়৷ সকাল আসে৷ গন্ধ হয়ে ভালবাসা সাজে শব্দের সুন্দরে৷
ভালবাসা যেন...
ভিতর থেকে ডাক এলো
ভালবাসা যেন..
শব্দের অন্ধকারে শরীরে গহীন উৎস জানা গেল
ভালবাসা যেন...
অনাবধনে শব্দ ডোরে মন জুড়ালো৷
ভালবাসা যেন ..
শেষ ইচ্ছা৷
জানালা টা খুলে রেখো…...
পিছল পথে চলতে গিয়ে
পিছিয়ে পরো যদি
হাত টি ধর লজ্জা কি
বৃহৎ জীবন- নদী
ভয় না পেয়ে ভয়কে জয়ের
সাহস রাখ বুকে
সেই রঙেতে রাঙিয়ে যাবে
কাটবে জীবন সুখে ।
পার হয়ে যাও অটল পাহাড়
পার হয়ে যাও মরু
হারিয়ে যদি যাও কখনো
মাঝে বিশাল তরু
বুকটা যদি পাথর হয়
তাতেও ফোটাও ফুল
জীবন মানে ওঠা পড়া
হাজার একটা ভুল ।
তুমি দূরে থাকবেই, পূজারিণী।
যে অদ্ভুত শিহরণে জড়িয়ে দিয়ে গেছ আমার সময়,
অরন্যের আড়াল থেকে অদ্ভুত বুনো গন্ধে
আমন্ত্রণের দৃঢ় ভীরু আবেশ,
সন্তরপনে নিজেকে সরিয়ে রেখেছ
মায়াবী মিলনাকাঙ্খার থেকে অনেক দূরে,
ছুঁয়ে দিয়ে যাও,
একই সময়েই দেখিয়ে দিয়ে যাও,
জটিলতা আর মনের চলন এক হয় না।
জাঁতাকল ছেড়ে অরণ্যাচারী আদিমতায়
মজিয়ে নিয়ে গিয়েও ফিরে আসো,
পেষনের মায়াবী স্বাভাবিকতায়।
একবার ভুলে যেতে যদি সভ্যতার বোধ
মনের সঙ্গে চলনের আবিলতা
তোমাকে স্পর্শ করত কি ?

পূজারিণী, সহজ প্রশ্নই জটিল হয়ে ওঠে সময়ে সময়ে।
চন্দনে মোড়া কাপ প্লেট--
পৃথিবীর বিপরীত বিন্দুতে ভেঙ্গে যায়,
এবং কথা ক'টি সরে পড়ে...
বাতাসের উড়ন্ত চুল গুলো হারিয়ে যায়,
গনিতের অঙ্কে শরীর গুলো শুকনো হয়,
সিগারেটের জমানো ছাই,
কথা ক'টি বললে ভাল হত,
বৃষ্টিহীন পৃথিবীতে শূন্য অঙ্ক কষে-
যে যার অভিমুখে;
আর বিবেকের জমানো দংশন-
দুটোকে মিশিয়ে সন্ধ্যের টিফিনটা সারানো যেতে পারে...
বৃষ্টি গায়ে বাতাসগুলো টিনের চালায়,
অনবরত শাসানি...
সাজানো গোছানো ঘর মানে নয় শুধু ঘর
একেবারে অগোছালো ঘরো নয় ঘর
আসলে গোছানো কি অগোছালো এই নিয়ে নয় ঘর?
ঘর মানে পরষ্পর অন্বেষণ
ঘর মানে ছাতা থাক ওর মাথায় রোদ্দুরে।
যা হোক, যেন ভাল থাকে ও।
আমি পিঠ দিয়ে ঠেকাব জঞ্জাল
হাসি কান্না ভাগ করে নেব সমানে সমান।

আড়াল আবডাল নয় খোলামেলা,
শুধু চাওয়া নয়,
অঞ্জলি ভরে যদি পারতাম দিতে, কি এমন চাই আর?
এইটুকুন সুখ আছে, আজ ওর থাক,
কাল নেব আমি।
ভালবাসা, ইচ্ছে বোনা এই হাত ওর,
আমি ঘোড়াকে খাওয়াব আজ,
কাল দেখো দুজনের ক্ষুরে এক্কা কী ভীষণ চলে।
ও তো রোজ চাঁদ ঢেলে দেয় আমার দুহাতে
আমি জোছনায় ধুয়ে মুখ,
আঁচল থেকে হাওয়া কেড়ে নিই মুছব বলে।
ঝগড়া বাঁধাই তুমুল,
ভীষণ কাঁদিয়ে ওকে কেঁদে ফেলি নিজে
গলাগলি ধরে হাসিও তুমুল,
ভীষণ ক্ষেপাই-
ও তার চিবুক ছুঁয়ে আড়ি ছুঁড়ে দিলে
আমি বাহুতে জড়িয়ে ওকে এঁকে দিই ঠোঁট,
মেনে নিই সোহাগী আঁচর
কোমল মুষ্টিতে মানি আয়াসি প্রহার
অসাবধানেও লেগে গেলে কেঁদে ফেলে খুব।
ঘর মানে দুজনে ব্যস্ত ভীষণ আমি ওর জন্যে, ও আমার,
আর আমরা আমাদের
পরস্পর বিশ্বাসে সাজাই ঘর,
ঘর মানে ওকে মুখ্য রেখে গৌণ থাকা নিজে ।
সুখ-দুঃখ-প্রেমের অনুভূতিগুলো
নিরন্তর ঘুরে চলেছে
তাদের অক্ষরেখা ধরে,
মাঝখানে শুধু তুমি আর আমি।
অনেক না বলা কথা
বলেছ আমায়।
তবুও একরাশ অভিমান
ভিড় করে থাকে তোমার মনে,

অপ্রকাশিত বাসনাগুলো
একে একে বের করে আনব
তোমার হৃদয়ের সিন্দুক থেকে;
পারবে না নিজেকে লুকিয়ে রাখতে।
আকাশের কোন তারাকে
খসে পড়তে দেব না
শুধু তোমার জন্য।
হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে
প্রতিটি মুক্ত একটা একটা করে তুলে
মালা গেঁথে পরাবো
তোমার গলায়।
তোমার দুঃখগুলো শুষে নেব
তপ্তবালির মতো আমি।
বুকে মাথা রেখে শুনবে
ঢেউয়ের আওয়াজ।
শান্ত নিরুত্তাপ হৃদয়ে
যা তুমি পাওনি কখনো।
বর্ষণমুখর বাদল দিনে
কালো মেঘ সরিয়ে দেব।
সূর্যের রশ্মি এসে পড়বে তোমার মুখে
রামধনুর সাতরঙে দেখব তোমার
উজ্জ্বল দীপ্ত মুখ খানি,
দুহাত বাড়িয়ে দেব
তোমার অন্তহীন চলার পথে
একমাত্র সঙ্গী আমি।
কী যেন প্রহর গুণে সৃষ্টিশীলতা
সৃজন ক্ষুধায় -
শব্দ সৈন্যদল মেতেছে বিপুল
এক সৃষ্টি নেশায় ,
কাব্য গল্প উপন্যাস কিংবা কোনো
আকুতি লেখায় ।
নতুন অঙ্গীকার , সুদীপ্ত মননে
বিদগ্ধ চেতনায় ।
অক্ষরে অক্ষরে অলংকৃত
সুরেলা সেতার,
উচ্ছ্বল বিহারে মগ্ন কামনায়
বর্ণময় অভিসার ।
বাক্য বিন্যাস ভিড়ে
সংযম হারায়
অগোছালো শব্দ তরঙ্গ
নিরন্তর খেলে যায়।

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

দুঃখের দলে সুখের ছলে,
নদীর তলে স্বচ্ছ জলে,
জল ভেঙ্গে দাও ডুব,
আলোর পুজায় জ্বালাও ধুপ।
পাথরে গড়া হৃদয় নিয়ে,
আর কতকাল জীবন যাপন,
আর কতকাল চন্দ্র প্রহর
প্রানের সুরে হিয়ার কাঁপন।
প্রানের টানে কর উজার
দুঃখের যত বন বাদার,
প্রেমের টানে ভিজাও মন
আঁচলে ঢাক রাত্রি আঁধার।
স্রোতহীন কোন নদীর বুকে,
কাটছে দিন পাথর সুখে,
নিরুদ্দেশ আজ স্বচ্ছ জল,
তোমার পানে নামল ঢল।
তোমার সুখে প্রানের অসুখ
পাথর দিয়ে রাখছ ঢেকে,
সূর্য কান্নায় কোমল আলোয়,
কাটছে দিন শিশির দেখে।
ঘোমটা খুলে আকাশ দেখ,
মনের মেঘে স্বপ্ন আঁক,
দুঃখ নয় আর একতিল,
হয় যদি হয় দু’জনের মিল।
ভেজানো তোয়ালে আড়াল করে
যে উষ্ণতা ঢেকে রাখি,
তার সঙ্গে দেখা হয় নি কতকাল,
সহসা দ্বিপ্রহরে, এক একলা সময়ে
ছুঁয়ে গেছ, বৃষ্টি হয়ে,
এ সান্ধ্য বাসরে তুমি ছেয়ে গেলে
আনন্দপ্রয়াস।
এবার হারিয়ে গেলেও আর কষ্ট হবে না বুকে,
চিনচিনে শব্দটা আর কানে আসবে না,
এক প্রবল গুরুতর আবেশ জ্বালিয়ে রাখবে চোখ,
তাকে ঘিরে অন্ধত্বের প্রলেপ।
এখনও একলা আছো কি রুবী পূজারিণী ?
জীবনের দৃশ্যমান বাস্তবতার কোলাহলে
হয়তো সত্যি আমাকে ভুলেই গেছো তুমি
আমার অজান্তেই সময়গুলো হারিয়ে গেছে
বদলে গেছে আশে-পাশের সব জানা অজানা।
তোমাকে নিয়ে ব্যস্ততা -এমনটিই ছিলো একদিন
সম্ভব অসম্ভবে হয়েছে আজ রূপান্তরিত
সময় বদলেছে আজ বাস্তবতার দাবি নিয়ে
দুটি পথ আজ দুদিকে গেছে ধেয়ে।
ধরনীর স্রোতে ভাটিতে হারিয়েছি সবকিছু
উভয়ের ভিন্ন ভিন্ন ব্যস্ততার কালের প্রবাহে
একে অপরকে ছিন্ন করেছি বহু আগে
ভুলে গেছি সেই অতীত-সব স্মৃতি কথা ।
যতবার ভুলতে চেয়েছি ঠিক ততবারই
তোমাকে নতুন করে পেয়েছি আগেরই মতো
সত্যিই হেরে গেছি আমি তোমার ভালবাসার দ্বারে।
তোমারি তরে নিরন্তর শুভকামনা...........
'' ভালো থেকো যেখানেই থাকো -''
আমি যে তোর ______
ভাদু পুজো, নদীর জলে চান
ভেজা যুবতীর লজ্জা ঢাকা
লাল কাপড় এক খান।
আমি যে তোর______
লালমাটির আলতা পড়া পা
শাল-সেগুনের জঙ্গলেতে
আমায় নিয়ে যা।
আমি যে তোর ______
কেন্দুপাতার মরমরে মল
মহুয়া ফুলের নেশা,
আমি তোর খোঁপায় গোঁজা
লাল পলাশের থোকা।
আমি যে তোর_____
ভ্যাপসা দুপুর, মাদল বাজার সুর,
ভরা যৌবনের ডিঙায় চড়ে
যাব অনেক দূর।
আমি যে তোর______
আড় চাউনি, লাজুক লাজুক হাসি,
আমি তোর বুকের খাঁজে
শুতে ভালোবাসি।
শূন্যতার অলক্ষ শিকারে অন্তরিক্ষময়
আমার এই ক্ষুদ্র জীবন।
অতএব লড়ছি নিজের ভেতরে
ততটাই যতটুক যাওয়া যায়।
আমি ছুই‍ঁনি এতটুকু যতটা
আমাকে ছাড়িয়ে যাবে।
নিজের অক্ষরেখায় বাড়ছে সময়
যা প্রবাহে আবহমান।
বিন্দু থেকে বৃত্ত পরিসরের স্রোতে
মৃয়-ধুলি কনা সমান।
গোধুলীর অস্তগামী সূর্যের পথ ধরে
আর কতদূরে সপ্তর্ষীর ঔজ্জ্বল্যতা
সেই ঈপ্সিত গন্তব্য?
রশ্মির আলো ক্ষীণ হয়ে দিকভ্রমের করে সৃষ্টি
এই বুঝি শেষ পথ -চলা, রাঙা চেতনায়
স্মৃতিভ্রমের খেয়ালী জড়তা ,স্তিমিত শিখায় লাগে
গরম হাওয়ার পরশ,অস্তাচলের আহ্বান
চিরন্তন আলিঙ্গনের প্রতীক্ষায়।
অচেতন দেহ অবুঝের মতো বিবর্ণ হয়ে যায়,
রঙধনুর বাহারি রংঙয়ের ধূসরতায়
যেখানে সীমান্ত শেষে নিশ্চল-হৃদয় টেনে চলে।

অশৈশব মিশেছিল নিসর্গ প্রেমে
হয়েছিলো শুরু সেই পথ চলা-
কৈশোর দুরন্ত তেজ নিয়ে যৌবনের দ্বারে
অচল ভাঙা হাঁটুতে অবিরাম চলা,
কামনা এনেছে বৈচিত্রের সম্ভার
কখনও বিতর্কিত কখনও সাহসের প্রতীক আবার
কখনও প্রেম দিয়ে সাজানো জমকালো ভালবাসা।
থামেনি তা আজও কঠিন গিরিশৃঙ্গে দূর্বল কোমড়ে
বন্ধুর পথে বিরামহীন যাত্রা কোন এক বিদগ্ধ
সময়ের টানে কোন এক বাস্তবতার তাগিদে
ঝরে পড়ে সব বসন্ত , থেমে যায় সব কুজন কাকলী ।
কানে আসে সেই রাখালিয়া বাঁশি
দূর কোন প্রান্তরে,
ছুটে যেতে চাই, তবু কেন লাজ
মরমের অন্তরে!!
মেঘ-মন্দিরা বাজায়ে ডাকিছে
এ নব বরষা আজি,
রিণিঝিনি পায়ে, কবরী এলায়ে
অভিসার-সাজে সাজি।
তোমার বার্তা পেলাম আজিকে
আষাঢ়ের ধারা সনে।
মনের মাঝারে এ কি হিল্লোল
বরষার গানে গানে।
বনফুল-দোলা কুঞ্জকাননে,
শরমের আভা কুসুম-আননে,
বনদেবী আজ সাজায়েছে ডালি
শ্যামল সবুজ বরণে।
বহুদূর হতে ঐ যেন শুনি
ময়ূরের কেকা-ধ্বনি,
আকাশ জুড়ে মেঘেরা আজ
করিতেছে কানাকানি।
তুমি আমার নিদ্রা ও অনিদ্রায় -
চেতন কিংবা অবচেতনে,
সুরে -অসুরে তুমি কেবল তুমি।
অন্ধকারে মিশে আছো নীরবে,
আলোয় ভরা ভূবনে তোমারি পদধ্বনি,
ঋতু বৈচিত্রে বহুরূপে তুমিই আমার শ্বাসে-প্রশ্বাসে।

কল্পনার উর্ধে নিরক্ষর এই আমি নতুন ভাবে
আবিষ্কার করি তোমাকে ভাবতে ভাবতে...
কবি হয়ে যাই নিন্দুকের সহস্র নিন্দায় গর্বিত হই
তির্যক চাহনিতে বেসামাল আমার সংস্কার
নক্ষত্রের উজ্জ্বলতায় তোমাকে মেলাতে চেষ্টা করি ।
আমি জ্যোৎস্নার আলোয় তোমার নন্দিত পূর্ণিমায় ডুবছি -
তোমার যৌবন সজীবতায় আমার শুষ্ক মরুদ্যানে
ঘটে বিস্ময়কর অংকুরোদগম.....
তোমার হাসির কাব্যিক সুধায় আমি পাগলপ্রায়
মায়াবতী মেঘ ঘন কুন্তলে সাঁতারের লোভ আমার
অবিরাম দিশেহারা করে গভীর কালো চোখ তোমার।
বিরল বর্ণনাহীন তোমার কপোলে ভ্রমর কৃষ্ণ তিলের
দিকে চেয়ে থেকে অন্ধই হইনা কেন- ক্ষতি কী তাতে!
ভঙ্গিমায় মরে গিয়ে নির্ঘাত নরকবাসী হতেও দ্বিধা নেই
তোমার নিক্কন ঝংকারে তোলপাড় বক্ষে উঠে ফেনিল ঢেউ ।
চালচিত্রে তীক্ষ্ণ দাগ, নখের।
চলে যায়, আসে এবং শূন্যতা।
স্বপ্নেরা গাছের ডালে দোল খায়, অপেক্ষায়,
কখন ছিঁড়ে পড়ে ও গাছের ডাল।
খেপা তখনও বলে যাচ্ছে,
ভয় নেই, তোর ভয় নেই।
খেলবার সময় এখন,
অযথা যা দেখেছ, তাকিয়ে দেখো না আর।
এ বেলায় পঞ্চানন তর্করত্ন
তর্কে হেরেছে আমার কাছে,
যদিও আমি যুক্তির ধার ধারিনি একেবারেই।

সম্পন্ন এক মন আন্দোলিত হচ্ছে কোন সকাল থেকে
একবার এ ডালে, একবার ও ডালে।
শেষকালে বেছে নেবে এক পুরনো পেয়ালা
ইতিহাসে জল দেবে বলে।
এখন আর কথা বলব না
ভারি মন নিয়ে বসে আছি তোমার ডাকের অপেক্ষায়
কোন এক অবসরে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে ফেলবে
সমুদ্রের কিনারে।
এতদূর যা যা বললাম সব লেখা আছে
এই লাইফ জ্যাকেটের ভিতরে।
একটা ফুল শুধু ফুটবে বলে অপেক্ষা করছে
সেই ছোট্টবেলা থেকে।

বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

অস্পৃশ্য নিশিকন্যার ছোঁয়ার আহ্বান ,
প্রতীক্ষার ললাটে কঠিন অবসান,
প্রেম হলে হৃদয় মাঠ হবে উত্তাল
বর্ণিল আলোতে একাকী আকাশ,
বর্ণিল আঁধারে একাকী পাতাল।
তোমার প্রতীক্ষায় প্রতীক্ষারা,
প্রতীক্ষার প্রহর গুনে পার করেছি মাস বছর।
দিন আর রাতের মিলনে
কখনো ভোর, কখনো সন্ধ্যা নামে।
নীল সিঁড়ি পাতিয়ে রেখেছি সুউচ্চ গিরিতে
তোমার প্রতীক্ষার অবসান কোন তিথিতে?
কখনো আলো, কখনো আঁধারে,
যৌবনের রং বয়সে বাড়ে।
কখনো স্বপ্নে যৌবনের আয়োজনে,
যৌবন আর তোমার নিদারুণ বিভাজনে,
তোমার স্পর্শে তৃষ্ণার অবাক জলপান
ফেরারি আমার যৌবনের পালা গান।
অতীত বিভ্রান্ত প্রতারনায় জীবন জরাজীর্ন,
অচেনা আমার আকাশে তোমার প্রতিবিম্ব ।
যে পথে শুধু ক্ষরণ,করেছ রপ্ত
দূষণের তীব্রতায় স্মৃতিরা অভিশপ্ত।
আর নয় কোন তীব্র প্রতীক্ষার প্রহর,
মুক্ত করো এই চির চেনা দুঃখ-স্মৃতির নহর।
মেঘ আসছে,আসুক
বৃষ্টি নামছে, নামুক।
আসুক এই দ্বীপ্রহরে যত ঝড়,
লন্ড ভণ্ড হোক জীবনের খেলাঘর।
শূন্যতার পাশে স্মৃতি আজ মৃতপ্রায়।
চেনা প্রশ্বাসের উষ্ণতা হাতড়ে বেড়ায়।
সংঘাতে সংঘর্ষে স্মৃতির বিভ্রান্ত আচরণ,
মিথ্যাশ্রিত শরীরের সত্যের বারন।
তোমার নামে বৃষ্টি আজ ব্যস্ত হৃদয় জুড়ে
নিক্ষিপ্ত জ্যোৎস্নার আলো জমে আামর আস্তাখুঁড়ে।
রোজ রোজ বাইরে যত সময় যাপন,
বিবর্ণ ভালোবাসার খোঁজে আমার নিঃসঙ্গতা আপন ।
ভুল করে ছুঁয়েছিলে ঝড়ো বাতাস,
কালো মেঘের ভিড়ে আমার আকাশ।
তোমার নীলেতে যখন মেঘ বাড়ে,
আমার বৃষ্টি তখন ঝরে মুষল ধারে।
মেঘে মেঘে ঘর্ষণে আগুন জ্বেলে,
মেঘের আড়ালে শূণ্যতা ডানা মেলে।
আমার বৃষ্টিতে আছে রিমঝিম ছন্দ,
তোমার মেঘেতে আছে ভালোবাসার গন্ধ।
সব কালো মেঘ দিলাম সরিয়ে,
বৃষ্টি নামাবো আজ নুপুর পরিয়ে।
আকাশে যত আলোর তোলপাড়
বেলা শেষে চাঁদকে কিছু দিও ধার।
শরৎ আর মেঘে আজ কত যে আপন,
অঝোর ধারায় বইছে নদীতে প্লাবন।
সবকিছু শোধ নেব সুদে আসলে
বৃষ্টিগুলো আজ তোমায় কি বলে?
পুবের আকাশে যখন মেঘতে কালো,
মর্মে মর্মে আমি জ্বেলেছি আলো।
ভুল করে কভু অনিদ্রিত চোখে,
আহত আমি আজ দিনের শোকে।
মেঘ চলে আসুক তোমর ঠিকানায়,
পরবাসী তোমার স্পর্শ আমার ডানায়।
ভুলে গেছো তুমি গত বর্ষার ছল,
চিনতে পারনি আজো আমার বৃষ্টির জল।
সান্ত্বনা আজ অস্তিত্বহীন,
ভাষা আজ মূক ও বধির,
শব্দের লেখনী আজ স্তব্ধ।
সোনার বাংলায় আজ প্রিয় হারানোর
গগন বিদারী আহাজারী ।অনাগত ভবিষ্যৎ অঙ্কুরেই
লাঞ্চিত ।কী এক অনাকাঙ্ক্ষিত দুঃস্বপ্ন ।
চলার পথে নির্মম হোঁচট ।স্বাধীন স্বপ্নে আজ রুদ্র ঝড়ের আভাষ ,
স্বাভাবিক জীবনে আজ অস্বাভাবিক দৃশ্যাবলি ।
সরল রাখালীয়া প্রাণখোলা ভাটিয়ালীর
“বাংলা” আজ নিয়মিত রক্তাক্ত ।

ধ্বংসের যূপকাষ্ঠে লাশের উৎকট গন্ধে
আকাশ হয়েছে ভারী বাতাস হয়েছে বিষাক্ত ।
বন্দনায়, কোলাহলে নিত্যকার ব্যস্ততায় ক্রমশঃ ম্লান হয়
অস্বাভাবিক জিঘাংসার বিভৎস স্মৃতিসব ।
মানুষের ভাগ্য খেলা করে গলা কাটা আর নির্ভেজাল
কোপের যা কখনই লক্ষভ্রষ্ট হবার নয় ।
ভয়ানক ইঙ্গিত কম্পিত বক্ষে
আজানা নতুন আশংকার জন্ম দেয় সঙ্গত কারণেই ।
আমরা বলীর পাঠা ।অর্থহীন বেঁচে থাকা এ মূল্যহীন
প্রচ্ছদ পটে ।মৃত্যুর গ্যারান্টি শতভাগ ,
বেঁচে থাকবার অনুমতি কারো দয়ায় নির্ভরশীল ।
পাঁজর ভাঙ্গা ইতিহাসের অসহায়
ধিকৃত সাক্ষী নবীন প্রজন্ম ।।
লোহিত সাগরের বক্ষে অশ্রুহীন নির্বাক বেদনায়
কষ্টের শুভেচ্ছা বিনিময় । মৃত্যুর মহোৎসবে অভিনব
কৌশলের নবযাত্রা ।সম্প্রীতির মিলন মেলায়
নিষ্ঠুর শার্দুলের মস্ত থাবা ।সব কিছু উলোট- পালোট।
এই রক্তিম গোধুলী লগ্নে
ভালবাসার আশা নিয়ে এগিয়ে যাও
আগামীর নিলয় প্রত্যাশায় ।
পখীদের কুহুটানে নদী ও সাগর জলে
মিলন পিপাসায় ভরে উঠুক
কামনাক্ত উপবাসী এই মন ।

নীলাভ চাদের আদরে আদরে জানিয়ে
দিতে চায় অনন্ত প্রেমের হৃদয়ের ভালোবাসা ।
মান অভিমান অনুযোগ ভুলে যাও-
ভুলে যাও অতীত ঝড়ের সেই তান্ডব ।
তোমার অবয়বে ঝরে পড়ুক
সন্ধ্যার শিউলী চঞ্চল বাতাসে ।
লজ্জা রাঙ্গানো রক্তিম চোখে
এলোচুল এসে পড়ুক আমার কাব্য সুধায় ।
উন্মুক্ত করে দাও তোমার রুদ্ধ বাতায়ন-
চেয়ে দেখো , তোমার অপেক্ষায়
দক্ষিণ মলয় শাখে শাখে দোল খায় ।
তোমার মুখের উপর দিয়ে
বয়ে যেতে চায় এই সুন্দর সমীরণ ।
আকাশের নক্ষত্রের আলোয়
পূর্ণ হোক এই আকাঙ্ক্ষা আমার ।
চাঁদের সোহাগী চুম্বনে জেগে উঠুক
সৃষ্টির আনন্দ ।
জ্যোৎস্নার বন্যায় দেহ ভেসে যাক
আদিম কোন এক গ্রহে,
মন শিউরে উঠুক নতুন প্লাবনে ।
শব্দের চরণে মাথা নুইয়ে নিবেদন করি
সকল ক্লিষ্টতা-ম্লানতা-জয়-পরাজয়-আনন্দ-বেদনা।
কিন্তু হায়, মরিচীকার মতোই শব্দের দেবী
তার ঝলমলে রূপখানা নিয়ে আরো দূরে চলে গিয়ে
কাঙ্গালের মতো আমায় দাড় করিয়ে রাখে তার
আধো ভেজানো দরজায়।
ধরা দিয়েও সে ধরা দেয়না কখনো কোনোভাবেই।।

মনে হয় জীবনের কিছু কথা লিখে ফেলি কবিতায়।
লিখি রাতের তারাদের কথা, নিঝুম মেঘে তোমার ভ্রুকুটি,
ক্লান্ত সময়, ভোরে ফোটা ফুল, সন্ধ্যার নদী,
আকাশ-পাহাড়-বাতাস-সাগর- পাখিদের কথা।
একরাশ শিউলি ফোটা শরত সকালে
লালপেড়ে শাড়ীতে দূ্র্গা প্রণামের কথা লিখি,
লিখি খোড়া ভিখিরির মলিন ছিন্ন বাসের কথা,
তোমার পরনারী প্রেমের গাঁথা।
কাঁদা-র মাটি দিয়ে যে দেহ গড়ে
আলোতে কি সে কভু নড়ে চড়ে।
কাংক্ষিত জীবন বলে নেই কোন কিছু,
কঠিন বাধা যদিও নেয় তার পিছু।
এটাই জীবন, এটাই মরন
তারই উপর সব ভার,
নিজের প্রতি আর তুমি
করোনা এত অবিচার।
আর নয় বয়ে বেড়ানো নিরব যন্ত্রনা
আমিই চির সাথী তোমার
এইটুকু দিতে পারি সান্তনা।
ভাবছো তুমি এই ক্ষত গুলো একাই সারাবে,
সবটুকু ব্যথা নিয়ে
হৃদয়ের রক্তক্ষরণ একাই থামাবে?
সবটুকু কষ্ট কি তোমার ?
ভেবেছ কি তুমি ?
একা একা কাটিয়ে দিবে সারাটি জীবন।
আগ্রাসী কষ্ট বুকে নিয়ে
তাড়াবে পুঞ্জিভূত সকল অন্ধকার।
কেন একাকী বইবে তুমি সব ব্যথার ভার
সব ব্যথা যদি বুকেই রাখো,
পাথরের গাঁয়ে কেন আমার ছবি আঁক?
আজ বড়ই অচেনা তুমি
অচেনা পথে একাকী দাঁড়িয়ে।
সহজ সরল শিক্ষকেরা
দালালীর শিকার ,
আমলা মন্ত্রী সবই তাদের
নাই কিছুই করার।
শিক্ষকের নেতা বনে
কোটি টাকার মালিক,
হাইব্রিড দামরার মত
গায়ে বেজায় ঝিলিক ।
শিক্ষক যখন ব্যস্ত ভীষণ
দালালী নিয়ে,
বড় বড় ভাষণ বেরোয়
তাদেরই মুখ দিয়ে ।
যতদিন এই দালালেরা
শিক্ষকের নেতা,
ততদিন শিক্ষা নিয়ে
চলবেই যা-তা ।
শিক্ষকেরা নিরুপায় আজ
দালালের খপ্পরে,
শিক্ষক নামের দালালেরা
নেতা হয়ে ঘুরে ।
শূন্যতায় উড়ে যায় ঘরছাড়া ভবঘুরে
হিসেব মেলাতে ঘাম ঝরে ,
খেরো খাতা নির্জনে একাকী পুড়ে
গোপন বেদনায় বীণা বাজে সুর ঝংকারে ।
হয়েছিল মনে ঝলমলে স্নিগ্ধ সকাল
ছোঁয়ায়ে আদুরে চুম্বন এঁকে দেয় অন্তরে,
শ্রাবণ মেঘদল নিমিষে হার‍ায় অন্তরালে
উধাও দূরদেশে ছুটে দূর হতে বহুদূরে ।
বড় অযত্নে মনে মনে মরিচিকা ধরে
অন্ধ করেছে আলোহীন নিস্তবতায়,
আশার দুঃস্বপ্ন কপালে দিয়ে দেয় টীকা,
নীরব কষ্ট নিয়ে বন্ধু , চলিলাম অনেক দূরে ।
জীবনের সবটুকু সময় নিশ্চিত জেনে
কেটে গেল অনেক দিবা-রজনী অবহেলার মোড়ে ।
গল্পের শেষটাতে আমি যদি হই আহামরি কিঞ্চিৎ
এক পলকেই হেরে যাই আমি সেই খেলায় নিশ্চিত ।
স্বপ্নহীন পৃথিবী
নিভৃতচারী সংকোচহীন
সমাজ সভ্যতায় বেমানান
নিঃসঙ্গ একাকী ম্রিয়মান নিন্দিত
চারিদিকের সবুজ সজীবতা মৌনতায় ম্লান ,
হাসি আনন্দগুলো মৃৃতপ্রায় । প্রেতপুরীর নিস্তব্ধতায়
ভৌতিক আবহে অস্তিত্বহীন এক কঙ্কাল ।
অনুভূতি আর ইচ্ছেগুলো মূল্যহীন , প্রতিকুল প্রেক্ষাপটে
নির্বাক যন্ত্রণার প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট ।
উদ্ভাসিত চাঁদের বাঁধ ভাঙ্গা আলো ফিরে তাকায় না ,
উদ্বেলিত খুশির জোয়ার আপন গতিতে ধায় ,
প্রষ্ফুটিত কলিরা অবহেলায় ভ্রূকুঞ্চিত করে ।
অপরাধ বোধে নিজেকে নিকৃষ্ট প্রতীয়মান হয় ।
নিজের কষ্টগুলো নিজের মাঝেই ঝড় তোলে-
আলোড়ণ সৃষ্টি করে অজান্তেই ক্ষত-বিক্ষত হৃদয়ে ।
জটিল বিমূঢ়তায় স্বচ্ছ পূর্ণিমায় গ্রহণ লাগে , অন্ধকারে
আবর্তিত হয় চলমান কষ্টগুলো ।
কোন এক অর্বাচীন বর্ণচোরা শব্দ কর্মীর দূর্বল লেখনীতে
শুধুই কষ্টের আঁচড় । অপ্রকাশিত যন্ত্রণার মাঝে খোঁজে
সে মানুষ , সঙ্গ প্রার্থনা করে সহমর্মী কারো ।
তার আহ্বান ফিরে ফিরে আসে তারই কাছে । এখানেও
ব্যর্থতায় ন্যূব্জ সে ।...................
অন্য কোথাও, অন্য কোথাও
বাঁকা পথে সূর্যেরা হাসি দিয়ে উঠলে
মনে হয় আগামী কোন সময়ে চোখ মেলি,
তখন শুধুই পথ হাঁটি ঘন অন্ধকারে।
সকালেই চোখ ছুঁয়ে দিলে ?
এঁটো বাসনের মত ছিটকে দিলে ছাইয়ের গাদায়
তখনই, নীল নদী, আকাশ, মাঠ, ধানের গন্ধ,
বৈশাখী ঝড় আর এটুকু জীবন ভালবেসে,
পাহাড় শিখরে পৌঁছে দিয়েছি
ফেনা-জল ভালবাসা এই মন।
যেতে হল না।
যখন সেই সকাল থেকে সঙ্গে যাবার বায়না ছিল,
তখন থেকেই, এক ভাঙা পথ হাঁটছিলাম।
না গিয়েও ফিরে এলো এখন, এখন।
একাত্তুরের রক্ত ঝরার শপথ,
বদরেরা খোঁজে মুক্তির পথ।
সভ্যতা যখন লজ্জায় মুখ ঢাকে
মানবতা হয় বারে বারে লাঞ্চিত ।
দায়বদ্ধতা উত্তোরণের ধারাবাহিকতায়
চলমান অতিক্রান্ত সোপানের সীমানায় ।
এক অনন্য ইতিহাস ,
এক কালজয়ী বিপ্লব ,
এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত -
উৎসর্গীত লাখো লাখো
প্রাণের আত্মার বিপ্লব
শুধুই যে বিজয়ের,
প্রতিশ্রুতির বাস্তবতা দৃঢ়,
জেনে রেখ নয় ক্ষণিকের ।
আলোর প্রদীপ শিখা চিরন্তন জ্বলে,
আকাশে মুক্তির কপোত উড্ডয়ন করে ।
যে অমার্জনীয় ধৃষ্টতা চির-শয়তান সমান
কালো অধ্যায়ের রাজাকার সেই কুখ্যাত সন্তান
ফাসির কাষ্টে ঝুলিয়ে হলো তার সমাধান।
সাফল্যের হাসিতে মুগ্ধ আজ
লক্ষ কোটি বাঙ্গলী জনতা
মানবতার জয় নিয়ে
প্রান ফিরে পেলো মুক্তিযোদ্ধা।
দিকে দিকে দিল ছড়িয়ে
আর একটি বিজয়ের আনন্দের বারতা ।
জয় মুক্তিযোদ্ধা - জয় মানবতা - জয় বাংলা
-------------------------------------
বিদেহী মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি কামনায়................
গোধুলী লগ্নে
বরষায় ধুয়ে মুছে যাক সব রং,
শুধু থেকে যায় যেন কিছুটা সবুজ,
পুষে রাখা অভিমানে সব ব্যথার নীল,
সূর্যের লাল আভা পরন্ত বেলায় এখনো অবুঝ।
বুঝেনা সে বুঝেনা কখনো লাল নীল সবুজ
জানেনা সে জানেনা মনের মাঝেতে হৃদয়ের ছোঁয়া,
সব রং, রং নয় তার কিছু রং শুধুই যে ধোঁয়া।
নীল প্রান্তে উড়ে উড়ে যায় নীড় হারা পাখী
জলকনা-আলো একান্ত যে আপন সৃষ্টি,
বিস্তীর্ণ নীল আকাশে তার রূপ যায় যে ঝরে,
সরল চোখে পৃথিবীর দিকে যে তার দৃষ্টি।
নির্ভয়ে সুউচ্চতায় বসত সে গড়ে।
যত কাছে আসুক, বা যতই ব্যবধানে
হাত ছুঁয়ে ছিলাম কোন এক প্রতিদানে,
ভুল করে করি, করি যে জেনে শুনে
কেন ছুঁয়ে ছিলাম তারে? কিভাবে?
যা করেছিলাম তা অতি সংগোপনে।
প্রেমের ভানে যে ঠকালো
বুঝলো না সে কি হারালো
মিছেই তারে বাসিস ভালো
চিন্তাটা তোর রাখ
জীবন জানিস একটুখানি
প্রেমের শুধু ভাগ দু আনি
এই কথাটা নে রে মানি
আনন্দে তুই থাক
আঘাত তোকে দিয়েছে সে
শমন ছিল প্রেমের বেশে
ভুল করেছিস ভালোবেসে
জীবন জেনো এমনতর
ভালোবাসা কঠিন বড়
নিজের দোষে নিজেই পড়ো
দুখের মরণফাঁদে
তবু জেনো আশা আছে
এই তো কত বন্ধু কাছে
প্রেমিক ছাড়াও মানুষ বাঁচে
আমোদে আহ্লাদে
এবার ফিরে আয়
বলে বলুক মন্দ লোকে
দেখুক নাহয় বাঁকা চোখে
ওসব লোকে দুদিন বকে
মাখিস না তুই গায়
আয়রে আবার জীবনপানে
এক সাথে চল যাই উজানে
মাতাল হাওয়া লাগুক প্রাণে
আবার বেঁচে উঠি
কষ্ট অনেক মনে পেলি
নতুন করে আবার খেলি
আয়রে আবার পাখা মেলি
দুঃখকে দেই ছুটি
আসলে জল পড়লে শান্তি নামক অনুভূতিটা
কেমন একটা আশ্বাস দেয় আজীবন থাকবে বলে.!
মেঘ থেকে জল পড়লে
মাটিতে-গাছেতে-ফুলেতে-ডালেতে শান্তি ছুঁয়ে যায়,
চোখ থেকে জল পড়লে
ওপাড়ার শান্তি আমার ঘরে কুটুম্ব হয়ে আসে।
রং-তুলি থেকে জল পড়লে
ক্যানভাস বিচিত্র হয়ে যায়-
মনটা প্রশান্তি ভোগ করে,
বেদনা আমার সযতনে জেগে থাকার সাধ,
আত্নঘাতী হৃদকণিকা দেখেনা কখনো মুক্ত আকাশ।
কতটা পথ ভ্রষ্ট আমার কত স্মৃতি, ?
এভাবে চলেছি আমি অনন্তকাল,
তোমার ভালোবাসা আগলে রাখতে
তীব্র যন্ত্রণায় কাতর কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ।
আঁধারের আঁতুড় ঘরে,
উৎসর্গ করে সুদিন,
অস্পষ্ট ভ্রষ্ট স্মৃতি।
লুকিয়ে লুকিয়ে আর কত কাল?
অবসাদে নিভে যায় গোপন আলো।
নগ্ন প্রেম, দাঁড়িয়ে আছে একঠায়,
ক্যানভাসের পিছনে উঁকিমারা আকাশটা
যেন জীবনের ডাকে উঠে যাওয়া
স্মৃতিহীন একটা পোড়ানো হৃদয় ।
খরস্রোতা নদীর মতই আমার অক্লান্ত সফর,
ভাবনার অতলে একজোড়া চোখ ভাবায় বেশী।
যার কাছে চাই জলঝর্নার শীতল ধ্বনি,
যার কাছে পাই বেঁচে থাকার ক্ষুদ্র আহ্বান!!
যে স্বপ্নে খেলে যায় বিহ্বল শরৎতের একরাত্রি,
যে স্বপ্নে থাকে অপেক্ষমান কোনো এক যাত্রী।
আঁধারের গভীরে অন্তহীন আঁধার
নীলকন্ঠি আকাশ আমার বড় বিষণ্ন।
এখানেই ফোটে সবুজ চোখের আদিগন্ত দৃষ্টি।
রোদেলা দুপুরের তপ্ত হাওয়ায় ভেসে যাই,
হারিয়ে যাই নামহীন কোনো এক নক্ষত্রে।
যার কাছে আমার কেবলি বিসর্জন!!
যার কাছে তাবৎ সংসার ছোট্ট পিনিস!
এমন আঁধারের বয়স মনের বয়সের মতই
লীন হয়ে যায় পাতাঝরা সবুজ অরণ্যে।
প্রবাহের নির্মম বাস্তবতায়
নেমে আসে শব্দহীন স্তব্ধতা,
নিরবতায় কাটে কিছু নষ্ট সময়,
অপরিছন্ন রুমাল দিয়ে পদ্যের ছন্দ মুছে,
আহত ঘড়ির কাঁটা খুঁড়ে খুঁড়ে চলে,
ভাষা হারিয়ে গেছে নষ্ট গদ্যের,
আমার নিরবতা তোমার অশ্রু নামায়।
কি হবে এত লিখে?
জীবন নামের এক ক্ষণস্থায়ী সংসারে
তারপরও লিখি- লিখে যাই
যদি তোমায় হাতে তুলে দিতে পারি,
আমার শুদ্ধ প্রেমে ইচ্ছেগুলো
আর অল্প কিছু সুখ।
নিঃশ্বাসে আজ জর্জরিত
আমার অসহায় নির্লজ্জ স্বপ্নগুলো।
চারদিকে এত জল্পনা কল্পনা চাপা উত্তেজনা
কেঁদে কেঁদে উঠে আমার ক্ষুদ্র বিবেক।
নিজেই নিজেকে ধিক্কার দেই
তোমার কষ্টটুকু নিতে না পারার জন্য।
জীবনের প্রতিটি অলিতে গলিতে পদদলীত হচ্ছে
তোমার অস্তিত্ব আমার প্রেম।
আমার তো সবটাই নীল বর্ণ দিয়ে ঘেরা
ধরতে চেয়েও পাইনা ধরতে অন্তরে অধরা
জীবন থেকে যখন বর্ণই হারিয়ে যায়
সেই জীবনের দাম তো কানাকরি হয়
রক্তের বর্ণ নীল, শিরায় উপশিরায়
গরলের বর্ণ ও নীল মিদিরায়
আকাশের বর্ণ নীল হলে জাগে উন্মাদনা
শরীরের বর্ণ নীল হলে বিলোপ হয় চেতনা
একাকিত্তের জীবনের বর্ণ সর্পিল নীলও
বর্ণহীন জীবন, তরল গরলে মিশে হয় কালো
এলোমেলো একাকী চলন...
স্মরণের দেহভার বরণের ক্ষমতায়
নৈঃশব্দ্য নেমে আসে শূন্য বাসরঘরে,
নিভে যায়, সলতেরা নিভে যায়
দোল খায় আঁধারের গলে।
এলোমেলো একাকী চলনে
ধরে রাখা মন-শবদেহ।